coronavirus

পরপর তিন কর্মীর মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়াল পরিবহণ নিগমে

গত সোমবার হাওড়ার বাসিন্দা এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমের কসবা ডিপোর এক কর্মীর মৃত্যু হয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৪:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত সোম থেকে শুক্রবারের মধ্যে কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরিবহণ নিগমের তিন কর্মীর মৃত্যুর পরে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে অন্য কর্মীদের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে দু’জন এসপ্লানেড বাসস্ট্যান্ডে কর্মরত ছিলেন। অন্য জন ছিলেন কসবা ডিপোয়। কর্মীদের অভিযোগ, কার্যত কোনও রকম সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজে আসতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এসপ্লানেডের মৃত দুই কর্মীর মধ্যে এক জন মহিলা। শ্যামবাজারের বাসিন্দা ওই মহিলা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমে কাজ করতেন। লকডাউনের সময় থেকেই টানা কাজ করে গিয়েছেন তিনি। এল-২০ বাসের ক্যাশ কাউন্টার সামলানোর দায়িত্বে থাকা ওই মহিলা গত ৩ জুলাই শেষ বার অফিসে আসেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার মারা যান তিনি। পরদিন, বুধবার মৃত্যু হয় দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের আর এক কর্মীর। সংক্রমিত হওয়ার পরে হোম কোয়রান্টিনে থাকা ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় আচমকাই।

Advertisement

এর আগে গত সোমবার হাওড়ার বাসিন্দা এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমের কসবা ডিপোর এক কর্মীর মৃত্যু হয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে।

ট্রেন বন্ধ থাকায় হাওড়া ও হুগলির বিভিন্ন জায়গা থেকে কলকাতা পর্যন্ত বাস চালাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। পরিবহণকর্মীদের অভিযোগ, এসপ্লানেডের বিভিন্ন কাউন্টারে যাত্রীরা দূরত্ব-বিধি মানছেন না। প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রী সরকারি বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করলেও কোথাও তাঁদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। বাসস্ট্যান্ড, টিকিট কাউন্টার বা যাত্রীদের প্রতীক্ষার জায়গা, কোনও এলাকাই জীবাণুমুক্ত করা হয় না। প্রতিটি যাত্রার শেষে বাস জীবাণুমুক্ত করার কথা থাকলেও তা নিতান্তই দায়সারা ভাবে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ‘আনলক’ পর্বের শুরুর দিকে বাসকর্মীদের পিপিই দেওয়া হলেও পরে আর সেই তৎপরতা দেখা যায়নি।

Advertisement

এসপ্লানেডের এক কর্মী বলেন, ‘‘প্রতিদিন যত সংখ্যক যাত্রী আসেন, সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের মতো পর্যাপ্ত কর্মী নেই। অত যাত্রীর থার্মাল স্ক্যানিং করা সম্ভব হয় না। অনেকের তো মাস্কও থাকে না। এই অবস্থায় কাউন্টারে বিভিন্ন যাত্রীর সংস্পর্শে আসায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।’’

কলকাতায় বাস পরিষেবা সচল রাখতে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের যে সব কর্মীকে জেলা থেকে সল্টলেকে এনে রাখা হয়েছে, তাঁদেরও গাদাগাদি করে সল্টলেক স্টেডিয়ামের যুব আবাসে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। একলপ্তে পরপর তিন-চার দিন কাজের পরে তাঁদের বাড়ি ফেরানো হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা অবশ্য অব্যবস্থার কোনও অভিযোগই স্বীকার করেননি। তবে পরপর তিন কর্মীর মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসেছে পরিবহণ দফতর।

মৃত কর্মীদের পরিজনেরা যাতে সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ পান, তা নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে কর্মীদের দাবি, শুধু ক্ষতিপূরণ দিলেই হবে না, পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ও সুরক্ষা সরঞ্জাম দিতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement