লকডাউন সম্পর্কিত প্রচারে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা।—ছবি পিটিআই।
করোনা সংক্রমণ রুখতে শহরের কিছু নির্দিষ্ট এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে সেখানে ফের লকডাউনের পথে হেঁটেছে রাজ্য সরকার। সেই সূত্র ধরেই শহরের কয়েকটি আবাসনও নতুন সুরক্ষা-বিধি চালু করেছে। কোথাও আবার পুরনো ব্যবস্থাতেই জোর দেওয়া হচ্ছে।
সাউথ সিটির আবাসিকেরা আনলক-১ পর্বে সকালে ও সন্ধ্যায় আবাসন চত্বরে হাঁটাচলার অনুমতি পেয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে ফের তা বন্ধ করার নোটিস দিয়েছে আবাসিক সংগঠন। শুধু তা-ই নয়, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব রকমের খেলাধুলোও। আবাসনের মন্দিরে প্রবেশেও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। শুধু পুরোহিতের নিত্যপুজোয় রয়েছে ছাড়পত্র। ওই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক এম ভি বিজু বলেন, ‘‘লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে মানুষও বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছিলেন। এখানে পাঁচ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই এক সপ্তাহের জন্য আমরা পুনরায় বিধিনিষেধ চালু করেছি।’’
লকডাউন ওঠার পরে সাউথ সিটি আবাসনের ক্লাবের রেস্তরাঁ খুলে দেওয়া হয়েছিল আবাসিকদের জন্য। তবে সেখানে তেমন ভাবে কেউ আসছিলেন না, বেশির ভাগই হোম ডেলিভারি নিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার থেকে তাই রেস্তরাঁ বন্ধ করে শুধু হোম ডেলিভারি চালু রাখা হয়েছে। আবাসনের কমন এরিয়ায় জমায়েত না-করা, বেঞ্চে না-বসার কথা নোটিসে জানানো হয়েছে। পরিচারিকা, গাড়িচালকদের আসার অনুমতি দেওয়া হলেও তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা ও যথাসম্ভব কম কথা বলার আবেদন জানানো হয়েছে আবাসিকদের কাছে। এম ভি বিজু জানান, কাজের সূত্রে বাইরে যাতায়াত করা আবাসিকদেরও থার্মাল স্ক্রিনিং চালু করা হয়েছে।
গড়িয়াহাটের মেঘমল্লার আবাসনে আবার পরিচারিকাদের বাইরে যাতায়াত কমানোর জন্য সেখানে থেকেই কাজ করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে। গাড়িচালকদের বলা হয়েছে, তাঁরা কারও ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারবেন না, পার্কিংয়ের জায়গায় অপেক্ষা করতে হবে। গাড়ির মালিক এসে তাঁদের হাতে চাবি তুলে দেবেন। ওই আবাসনের সম্পাদক অমিত বসু বলেন, ‘‘পিওন, কুরিয়ার বা হোম ডেলিভারির জন্যও আবাসনের ভিতরে নির্দিষ্ট জায়গা করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে আবাসিকদের জিনিস সংগ্রহ করতে হবে।’’ গ্যাস সিলিন্ডার ফ্ল্যাটের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ থাকলেও জলের ব্যারেল নীচ থেকে ট্রলিতে চাপিয়ে লিফটে করে উপরে নিয়ে যেতে হবে আবাসিকদেরই।
নতুন ভাবে কোনও নিয়ম জারি না-করলেও দূরত্ব-বিধি মেনে চলা, মাস্ক পরা, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহারের পাশাপাশি পরিচারিকাদের সুরক্ষার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে সানি পার্ক থেকে শুরু করে ভিআইপি-র কয়লাবিহার বসুন্ধরা, এয়ারপোর্ট সিটির মতো শহরের অন্যান্য আবাসনেও।