প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে সংক্রমণ ঠেকাতে আপাতত টোকেন ব্যবহার বন্ধ রাখার কথা ভাবছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে মেট্রো সফরে স্মার্ট কার্ডই হবে একমাত্র মাধ্যম। কর্তৃপক্ষের মতে, ওই ব্যবস্থায় যাত্রীদের মধ্যে স্পর্শজনিত সংক্রমণ ছড়াবে না। সূত্রের খবর, এ জন্য মেট্রোর তরফে অতিরিক্ত স্মার্ট কার্ডের বরাতও দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
১ জুলাই থেকে মেট্রো চালানোর বিষয়ে রাজ্যের আগ্রহের কথা শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান। এর প্রেক্ষিতে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রেল বোর্ডের কাছ থেকে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। নির্দেশ পেলে তা মেনেই পরিষেবা শুরু হবে।” মেট্রো সূত্রের খবর, ভিড় ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত একাধিক বিষয় সামলানোর জন্য তাদের রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের সাহায্যের প্রয়োজন হবে। এই সম্পর্কে দু'পক্ষের আলোচনার পরেই পরিষেবা শুরুর খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হবে।
দীর্ঘ লকডাউনে রক্ষণাবেক্ষণের একাধিক কাজ শেষ হয়েছে বলে মেট্রো জানিয়েছে। রেকের রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও মেট্রোর বাতানুকূল ব্যবস্থা, তৃতীয় লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ, চলমান সিঁড়ির সংস্কার-সহ একাধিক কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এমনকি স্টেশন, টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্ম এবং কামরায় ওঠার আগে দূরত্ব-বিধি মেনে চলার স্বার্থে যাত্রীরা কোথায়, কী ভাবে দাঁড়াবেন তা-ও রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। রেলরক্ষী বাহিনীর কর্মীদেরও ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সম্পর্কে প্রাথমিক ভাবে অবহিত করা হয়েছে। সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা ভেবে মেট্রোর পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। লকডাউনের আগেই মেট্রোর দৈনিক যাত্রী আগের থেকে প্রায় দু’লক্ষ কমে সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষের মধ্যে ছিল। এখন যাত্রী কত হবে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, পরিষেবা শুরু হলে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়বে বলে মনে করছেন যাত্রীদের অনেকেই। আশঙ্কা রয়েছে বয়স্ক ও অসুস্থ কর্মীদের নিয়ে পরিষেবা শুরু করা নিয়েও।
এই সব আশঙ্কার কথা ভেবেই আপাতত টোকেনের ব্যবহার বন্ধ রাখতে চান কর্তৃপক্ষ। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী যত আসন তত যাত্রী নিয়ে মেট্রো চলার কথা বলেছেন। মেট্রোর আধিকারিকদের একটি অংশের দাবি, ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্ল্যাটফর্মে রক্ষী মোতায়েন ছাড়াও ব্যস্ত সময়ে ট্রেনের ব্যবধান কমানোর পরিকল্পনা তাঁদের রয়েছে। তবে, কোন সময়ে কোন স্টেশন থেকে কত জন যাত্রী উঠবেন, তা আগাম নির্ধারণ করে মেট্রো চালানো অসম্ভব। তাই বাসের মতো সব আসনে যাত্রী নিয়ে মেট্রো চালানো অসুবিধাজনক। তবে দূরত্ব-বিধি মানার জন্য যাত্রীদের সচেতন করতে নিরন্তর প্রচার চালাবে বলে জানিয়েছে মেট্রো। যাত্রীদের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হবে। প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা থাকবে। স্টেশনে স্যানিটাইজ়ার-সহ হাতশুদ্ধির বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে।