শুদ্ধকরণ: ক্রেতার হাতে স্যানিটাইজ়ার দিচ্ছেন এক হকার। সোমবার, গড়িয়াহাটে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
দোকান খুলে সবে পোশাক টাঙানো শুরু হয়েছে। তারই মধ্যে এসে হাজির ক্রেতা। কিন্তু সাজানো পোশাকে তিনি হাত দেওয়ার আগেই এক কর্মী এগিয়ে এলেন স্যানিটাইজ়ারের বোতল নিয়ে। মহিলা ক্রেতাও দু’হাতে ভাল করে স্যানিটাইজ়ার ঘষে তবেই পোশাক দেখতে শুরু করলেন।
আড়াই মাস বন্ধ থাকার পরে সোমবার এ ভাবেই সুরক্ষা-বিধি মেনে দোকান খুললেন গড়িয়াহাটের হকারেরা। তবে সরকারি ঘোষণা মেনে জোড়-বিজোড় সংখ্যায় দোকান খোলা হয়। এ দিন ১ নম্বর দোকান থেকে প্রতিটি বিজোড় নম্বরের দোকান খোলার অনুমতি ছিল। তবে ট্রেন না-চলায় বন্ধও ছিল কিছু দোকান। বিজোড় নম্বরের দোকানের মোট ৬০ শতাংশ দোকান এ দিন খোলা ছিল। লকডাউনের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে হকারদের অনেক স্টলেই জল ঢুকে গিয়েছিল। এ দিন এক হকারকে দেখা গেল, দোকান খোলার পরে রোদে দিয়েছেন চটের তৈরি কিছু ব্যাগ। তবে জিনিসপত্রের তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানালেন তিনি।
আড়াই মাস পরে দোকান খুলতে পেরে কিছুটা কি স্বস্তি পেলেন? উত্তরে একটি দোকানের কর্মী জানালেন, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে তাঁরা শঙ্কিত। তবে দোকান বন্ধ করে রাখলেও আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হচ্ছে। এ দিন সন্ধ্যায় কয়েক জন বিক্রেতা জানান, চেনা ভিড় স্বাভাবিক ভাবেই দেখা যায়নি। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক-দু’জন করে ক্রেতা তাঁরা পেয়েছেন।
গড়িয়াহাট হকার্স ইউনিয়নের তরফে দেবরাজ ঘোষ জানান, হকারদের বলা হয়েছে ক্রেতা আসার সময়ে, টাকা লেনদেন এবং জিনিস দেওয়ার পরে বিক্রেতা, কর্মী ও ক্রেতার হাতে স্যানিটাইজ়ার দিতেই হবে। মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তবে শুধু গড়িয়াহাটে নয়, কসবার কাছে ফুটপাতের দোকানেও দেখা গেল, খাবার দেওয়ার আগে ক্রেতাকে ড্রামের উপরে রাখা বোতলের জলে হাত ধুতে বলা হচ্ছে। বোতলে রাখা সাবান গোলা জল এবং তার পরে পরিষ্কার জলে হাত ধুলে তবেই খাবার দিচ্ছেন বিক্রেতা।
উত্তরের হাতিবাগানের হকার মার্কেট অবশ্য এ দিন সার্বিক ভাবে খোলেনি। হাতে গোনা কয়েক জন হকার দোকান খুলেছিলেন। তাঁরাই জানালেন, প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁদের ৮ তারিখের পর থেকে দোকান খুলতে বলা হয়েছিল। তাই হকারেরা আজ, মঙ্গলবার থেকে জোড়-বিজোড় সংখ্যায় দোকান খুলবেন। এ দিন দোকান খোলার প্রস্তুতি সেরে রাখতে এসেছিলেন প্রভাত দাস নামে এক হকার। তিনি জানান, দোকান খুললে সকলকেই মাস্ক পরতে হবে। এ বার থেকে জিনিস হাত দিয়ে না-দেখার অনুরোধ করা হবে ক্রেতাদের। যেটা তাঁদের পছন্দ হবে, দোকানের কর্মীরাই খুলে দেখিয়ে দেবেন। তবে ফুটপাতে সাধারণত হাতে নিয়ে দেখেশুনে জিনিস কিনতে পছন্দ করেন ক্রেতারা। তেমন পরিস্থিতিতে ক্রেতাকে জিনিস ধরার আগে স্যানিটাইজ়ার দিতে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। হাতিবাগানের ফুটপাতে এ দিন ক্রেতা না-মেলায় খানিক পরে দোকান বন্ধও করে দেন কয়েক জন।