ফাইল চিত্র।
পাড়ার কোনও বাড়িতে বিদেশ থেকে কেউ এসে থাকছেন জানলেই পুরসভাকে খবর দিতে ছুটছেন স্থানীয়েরা। সেই তথ্যের ভিত্তিতে পুর কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন। বিদেশ-ফেরত বাসিন্দাদের কাছে কর্তৃপক্ষের আবেদন, ১৪ দিন সপরিবার বাড়িতেই থাকুন। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকাতেও রয়েছে সেই বার্তা। যদিও বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের অনেকেই সে সব মানতে চাইছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সপরিবার ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকাকালীন কী ভাবে চলবে জীবন? হয়তো এই ভাবনা থেকেও তথ্য গোপনের প্রবণতা তৈরি হচ্ছে বাসিন্দাদের মধ্যে। এই প্রশ্নই ঘুরে-ফিরে উঠছিল বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষের চিন্তায়। কারণ, ওই পুর এলাকা, বিশেষত সল্টলেকের প্রায় প্রতি বাড়ির কোনও না কোনও বাসিন্দা বিদেশে থাকেন। এই বিপর্যয়ে তাঁরা অনেকেই দেশে ফিরছেন। ফলে পরিবারগুলিকে সাহায্য করতে খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কী ভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, ভাবছে পুরসভা।
পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এ জন্য পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে। খাবার বা অন্যান্য জিনিস সরবরাহ করা হলেও তা কোয়রান্টিনে থাকা লোকের স্পর্শ এড়িয়েই করতে হবে। সুতরাং সব বিবেচনা করে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে এসে সল্টলেকে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হওয়া বাসিন্দাদের কয়েক জনের কথায়, ‘‘প্রয়োজন মতো অনলাইনে কিনতে চেষ্টা করা হচ্ছে। মজুতও করা হচ্ছে জিনিস। কিন্তু সবার পক্ষে সে ভাবে সম্ভব না-ও হতে পারে।’’
কী ভাবছেন কাউন্সিলরেরা? ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় জানান, সমস্যা জানালে পুর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো সহযোগিতা করা হবে। ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায় জানান, তাঁর ওয়ার্ডে এক তরুণী বিদেশ থেকে এসেছেন। তাঁর পরিবারকে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় জিনিসের কথা জানালে পুরসভা সরবরাহ করে দেবে।
সল্টলেকের একটি ব্লক কমিটির কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘যাঁরা বিদেশ থেকে এসেছেন, তাঁরা অন্তত নিজেদের স্বার্থেই ১৪ দিন ‘হোম কোয়রান্টিনে’ থাকুন। সাহায্যের দরকার হলে অবশ্যই করা হবে। কী ভাবে তা করা হবে, তা নিয়ে পুরসভা নির্দেশিকা দিলে ভাল হয়।’’ বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই বাসিন্দাদের সব সহযোগিতা করা হবে। তবে কী ভাবে করা হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।
ওই বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ও। কী ভাবে তাঁদের খাবার-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করা যাবে, সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। আবাসিক সমিতিগুলিও সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।