অপেক্ষা: হাওড়া স্টেশনে পৌঁছনো রেলযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য লাইন করে দাঁড় করাচ্ছেন পুলিশকর্মী। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়া স্টেশনে যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষা শুরু করতেই শনিবার পাওয়া গিয়েছিল জ্বর নিয়ে আসা ১০ জন যাত্রীর সন্ধান। রবিবার সকালে হাওড়ার নতুন কমপ্লেক্সে আসা শুধু একটি ট্রেন থেকেই মিলল আরও তিন জন জ্বরে আক্রান্ত যাত্রী! রেল সূত্রের খবর, এই ১৩ জন যাত্রীই এসেছিলেন মুম্বই থেকে। আতঙ্ক এখানেই। মাত্র দু’দিন ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করতেই ১৩ জন জ্বরে আক্রান্ত যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেল। পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় গত সাত দিনে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা প্রায় ৫০ জোড়া দূরপাল্লার ট্রেনে চেপে কত জন জ্বর ও করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা যাত্রী এ শহরে ঢুকেছেন?
যদিও এর উত্তর নেই রেলের কাছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে রেল যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। শনিবার থেকেই হাওড়া স্টেশনে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় জ্বরে আক্রান্তদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
সেই যথাযথ ব্যবস্থা ঠিক কেমন? হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্স থেকে বেরোনোর মোট গেট ১১টি। গত কাল সেগুলির মধ্যে মাত্র একটি, ১১ নম্বর গেটেই ছিল জ্বর মাপার ব্যবস্থা। বাকি ১০টি গেটে সে সবের কোনও পরিকাঠামোই ছিল না। শুধু তাই নয়, ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে যাত্রীদের জ্বর মাপছেন যাঁরা, রেলের সেই জওয়ানদের জন্য কোনও মাস্ক, গ্লাভস এবং স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাও ছিল না। কেন? পূর্ব রেলের কর্তারা জানাচ্ছেন, তেমন কোনও নির্দেশ নেই। রেল বোর্ড নির্দেশ দিলে সেই ব্যবস্থা করা হবে।
রেল সূত্রের খবর, শনিবার রেল বোর্ডের তরফে যাত্রীদের জ্বর পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ আসার পরেই দুপুর থেকে শুধু ১১ নম্বর গেটে একটি ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে পরীক্ষা করা শুরু হয়। যাত্রীদের পরীক্ষা করছিলেন রেলরক্ষী বাহিনীর যে জওয়ানেরা, তাঁদের কাছে ছিল না কোনও গ্লাভস, উন্নত মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার। শুধু তাই নয়, কোনও চিকিৎসক বা আইসোলেশনের ব্যবস্থা না থাকায় শনিবার প্রথম দিকে ১০৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা নিয়ে আসা তিন যাত্রীকে বাড়িও চলে যেতে বলা হয়। এর পরের সাত জনকে ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কোয়রান্টিন সেন্টারে এবং তিন জনকে সত্যবালা আই ডি-র আইসোলেশনে পাঠানো হয়। রবিবার ১০৩ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা নিয়ে আসা তিন যাত্রীকে রাজারহাটের কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়।
হাওড়ার পুরনো কমপ্লেক্সে রবিবার কোনও ট্রেন না আসায় বন্ধ ছিল জ্বর মাপার ব্যবস্থা। পরিবর্তে নতুন কমপ্লেক্সের একটি গেটে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে এ দিন স্টেশনের বাইরে একটি বাস রাখা ছিল। সেই বাসেই তিন জন যাত্রীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়।