Coronavirus in West Bengal

সংক্রমণ বাড়ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের, সর্বত্রই ধাক্কা খাচ্ছে পরিষেবা

সাগর দত্তে সেন্ট্রাল ল্যাবের এক টেকনোলজিস্ট আক্রান্ত হয়েছেন। পাভলভে এক নার্স আক্রান্ত হওয়ায় অন্য ২৮ জন নার্সের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

ছবি এএফপি।

স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে এই সংক্রান্ত সমস্যা। মঙ্গলবার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পাভলভ মানসিক হাসপাতাল এবং পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। পিয়ারলেসের মতো ওই সব হাসপাতালেও থমকে গিয়েছে পরিষেবা।

Advertisement

সাগর দত্তে সেন্ট্রাল ল্যাবের এক টেকনোলজিস্ট আক্রান্ত হয়েছেন। পাভলভে এক নার্স আক্রান্ত হওয়ায় অন্য ২৮ জন নার্সের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হওয়ার কথা। পার্ক সার্কাসের হাসপাতালে আবার দু’জন ওয়ার্ড বয়-সহ করোনা পজ়িটিভ ১৪ জন।

প্রতিটি হাসপাতালেরই বক্তব্য, স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা তো রয়েইছে। সেই সমস্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে সামাজিক অসহযোগিতায়। সাগর দত্তের উপাধ্যক্ষ পলাশ দাস জানান, আক্রান্ত কর্মীর স্ত্রী কোয়রান্টিনে যাওয়ার আগে সাত বছরের ছেলেকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে যান। কিন্তু সেই শিশুটিকে শ্বশুরবাড়িতে রাখা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। উপাধ্যক্ষের কথায়, ‘‘হাসপাতালের একাধিক কর্মীকে এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মানুষকে বুঝতে হবে, এ ভাবে চললে তাঁদেরই পরিষেবা পেতে সমস্যা হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পাভলভ থেকে ফিরে মায়ের পাশে

পার্ক সার্কাসের হাসপাতালে শুক্রবার ‘নিওনেটাল ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ (নিকু)-এর এক জন নার্সিং স্টাফের প্রথমে করোনা ধরা পড়ে। শনিবার তাঁর সংস্পর্শে আসা ১৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা পরীক্ষা হয়। তার মধ্যে ১৪ জনের দেহে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে।

ওই বেসরকারি শিশু হাসপাতালের অধিকর্তা অপূর্ব ঘোষ জানান, পেডিয়াট্রিক বিল্ডিং খোলা থাকছে। আক্রান্তেরা যে হেতু নিকু-র কর্মী, তাই সেখানে আপাতত ভর্তি বন্ধ রাখা হচ্ছে। মূল ভবনের ক্ষেত্রে আজ, বুধবার সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সামাজিক অসহযোগিতা নিয়ে তাঁর গলাতেও অনুযোগের সুর। অপূর্ববাবুর কথায়, ‘‘করোনার চেয়ে নন-করোনা সমস্যা বেশি ভোগাচ্ছে। মানুষের অসুখ হলে তাঁরা কোথায় যাবেন? যে শিশুদের এই লকডাউনের মধ্যেও ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল, তারাই বা কোথায় যাবে? নিজেদের স্বার্থে পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে আমাদের সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: ৪২ দিনে খাবারের বিল ছাড়াল চার লক্ষ

এই সমস্যা সম্পর্কে অবহিত স্বাস্থ্য দফতরও। যার প্রেক্ষিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করার যে পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছিল, তা আবার গতি পেয়েছে। বেলেঘাটা আইডি, এম আর বাঙুরের পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ৫০০ শয্যার পরিকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের। এর মধ্যে ২০০টি কোভিড এবং ৩০০টি সারি (সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) রোগী ও করোনায় আক্রান্ত প্রসূতিদের জন্য ভাবা হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী নির্মল মাজি বলেন, ‘‘এ নিয়ে এখনও লিখিত নির্দেশ আসেনি।’’

এ দিকে, এক নার্সের করোনা হওয়ায় পাভলভে ২৮ জন নার্সের নমুনা পরীক্ষা হবে। বর্ধমানের বাসিন্দা ওই নার্স ২৯ এপ্রিল থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। থাকতেন নার্সিং হস্টেলে। গত শুক্রবার তিনি বাড়ি চলে যান। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ে। ২৯ এপ্রিল জ্বর আসার পরেও ওই নার্স কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠেছে, আইসোলেশনে না রেখে তাঁকে বাড়ি যেতে দেওয়া হল কেন?

সুপার গণেশ প্রসাদ জানান, জ্বর আসার পরে আক্রান্তকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। নমুনা পরীক্ষার জন্য যে ২৮ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে, তার বাইরেও এক নার্সের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্ট আসেনি। সুপারের কথায়, ‘‘সব হাসপাতালেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement