সতর্কতা: করোনা সংক্রমণ রুখতে পুলিশের কিয়স্কে ছড়ানো হচ্ছে রাসায়নিক। শনিবার, মহাত্মা গাঁধী রোডে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
স্বাস্থ্যকর্মীদের মতো লড়ছেন তাঁরাও। রাস্তায় নামতে হচ্ছে প্রতিদিন। মানুষের সংস্পর্শেও আসতে হচ্ছে। তাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকছে সব সময়ে। সেই কারণেই এ বার পুলিশকর্মীদের আবাসন থেকে কর্মস্থল— সব জায়গাই জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করলেন কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা (ডিএমজি)।
লালবাজার সূত্রের খবর, জলের সঙ্গে জীবাণুনাশক সোডিয়াম হাইপো-ক্লোরাইট রাসায়নিক মিশিয়ে জল-কামান বা ফগিং মেশিনের সাহায্যে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পুলিশ আবাসন, থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডে। এই কাজের জন্য ডিএমজি-র ওসি কঙ্কণ রায়ের নেতৃত্বে তৈরি করা হয়েছে দু’টি বিশেষ দল। প্রতিটি দলে রয়েছেন ছ’জন করে সদস্য। বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রতিটি দলের সঙ্গে থাকছে একটি করে জল-কামান এবং ফগিং মেশিন। বড় রাস্তায় কিংবা লালবাজারের মতো জায়গায় জল-কামান দিয়ে ওই রাসায়নিক ছড়ানো হচ্ছে। আবার গলির ভিতরে যে সব থানা, ট্র্যাফিক গার্ড কিংবা আবাসন রয়েছে, সেখানে ফগিং মেশিন দিয়ে কাজ করছেন দলের সদস্যেরা।
করোনা-আতঙ্কের মধ্যেও পেশার তাগিদে সারা দিন বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। অনেকের সঙ্গে মেলামেশাও করতে হচ্ছে। ডিউটি সেরে আবাসনে ফিরছেন তাঁরা। এক পুলিশকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবে প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডের ব্যারাকে থাকতে বলা হয়েছে। যাঁরা শহরের আবাসনে থাকেন, তাঁরা রাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন অনুমতিসাপেক্ষে। তবে তাঁদের পরিবারের কেউ যাতে সংক্রমিত না হন, তা নিশ্চিত করতে বাড়িতে ঢোকার আগে নিজেদের জীবাণুমুক্ত করতে বলা হয়েছে পুলিশকর্মীদের। একই সঙ্গে তাঁদের কর্মস্থল এবং আবাসনগুলিকেও পর্যায়ক্রমে বারবার জীবাণুমুক্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
শুক্রবারই উত্তর কলকাতার বিভিন্ন পুলিশ আবাসন, ট্র্যাফিক গার্ড এবং থানায় ওই কাজ করেছেন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিএমজি-র সদস্যেরা। শনিবার তা করা হয় মধ্য কলকাতার পুলিশ আবাসন এবং থানাগুলিতে। ডিএমজি-র দু’টি দলের সদস্যেরা ঘুরে ঘুরে ওই কাজ করছেন। লালবাজারকে অবশ্য আগেই জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, শহরে পুলিশ আবাসনের সংখ্যা ৪৮। জীবাণুমুক্ত করার তালিকায় রয়েছে আবাসন ছাড়াও ন’টি ডিভিশনের ৭৯টি থানা এবং ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ড। একই সঙ্গে জীবাণুমুক্ত করা হবে পুলিশের ছোট-বড় সব ফাঁড়ি বা অফিসকেও। আপাতত দু’টি দল প্রতিদিন একটি ডিভিশনের নির্দিষ্ট জায়গায় জলের সঙ্গে জীবাণুনাশক ছড়িয়ে জীবাণুমুক্ত করার কাজ করছেন।