শনিবার রবীন্দ্র সরোবর থানার সামনে প্রিজ়ন ভ্যানে ত্রিধারাকাণ্ডের ৯ অভিযুক্ত। —নিজস্ব চিত্র।
ত্রিধারা-কাণ্ডে ন’জন অভিযুক্তকে কলকাতা হাই কোর্ট শুক্রবারই অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ কার্যকর হতে হতে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গেল। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ রবীন্দ্র সরোবর থেকে জামিনে মুক্তি পান তাঁরা। কেন তাঁদের ছাড়তে দেরি হচ্ছে? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছিল। ধৃতদের আইনজীবীরা অভিযোগ তুলতে শুরু করেছিলেন, পুলিশই ইচ্ছাকৃত ভাবে ছাড়ার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করছে। শুক্রবারই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া যেত। কিন্তু, এর মধ্যেও আরও একটি তত্ত্ব উঠে আসতে শুরু করে। তা হল নাম-বিভ্রাট।
ত্রিধারার পুজো মণ্ডপে স্লোগান দিতে গিয়ে যে ন’জন গ্রেফতার হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন আইজ়ার রহমানও। কিন্তু পুলিশের খাতায় প্রাথমিক ভাবে আইজ়ার নাম ছিল না। আইজ়ারের বদলে নাম লেখা ছিল ‘সাগ্নিক মুখোপাধ্যায়’। পিতার নাম ছিল মৌলিক মুখোপাধ্যায়। কিন্তু পরে আদালতের নথিতে দেখা যায়, সাগ্নিক বলে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আদালতের নির্দেশনামায় যাঁদের অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তির কথা বলা হয়েছে, সেখানে সাগ্নিকের নাম নেই। বদলে সেখানে রয়েছে আইজ়ার রহমানের নাম। স্বাভাবিক ভাবে পিতার নামও ভিন্ন। আধার নথিও বলছে নাম আইজ়ারই।
তা হলে কি আইজ়ারই নিজের নাম ভুল জানিয়েছিলেন পুলিশকে? না কি অন্য কোনও ভ্রান্তির কারণে এই বিপত্তি? তা নিয়ে ইতিমধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। এই ‘নাম-বিভ্রাট’ নিয়ে খোঁচা দিতে শুরু করেছে শাসক শিবিরও। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বলেন, “আন্দোলন করতে পারছেন, বিক্ষোভ দেখাতে পারছেন, পুজো মণ্ডপে গিয়ে সাধারণ দর্শনার্থীদের শান্তি বিনষ্ট করে স্লোগান দিতে পারছেন। কিন্তু নিজের সঠিক নামটি বলতে পারছেন না! এটা কোনও কাজের কথা হল? এ নিয়ে তো প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। সন্দেহ থাকাটাও অমূলক নয়।”
কুণালের খোঁচার জবাব দিয়েছেন ধৃতদের আইনজীবী শামিম আহমেদ। তাঁর ব্যাখ্যা, “পুলিশ জোর করে অ্যারেস্ট মেমোতে সই করিয়েছে। সেখানে ঠিক নাম দিতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধ্যকতা নেই।” উল্টে পুলিশ কী ভাবে উপযুক্ত তথ্য ও নথি ছাড়া গ্রেফতার করল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, আদালতে যে কোনও ভুল তথ্য দেওয়া হয়নি, সে কথাও উল্লেখ করেছেন শামিম।