যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরদার ক্যামেরা নিয়ে আবার বিতর্কের মেঘ ঘনাচ্ছে। যিনি উপাচার্য হয়ে এসেই সব সিসি ক্যামেরা সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই সুরঞ্জন দাসই ফের ওই ক্যামেরা বসাতে উদ্যোগী হয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ সোমবার সব পক্ষকে বৈঠকে ডেকেও ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
ক্যাম্পাসে মাদক সেবনের অভিযোগে এ দিনই সন্ধ্যার দিকে ছ’জনকে ধরেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁদের মধ্যে চার জন বহিরাগত। কর্তৃপক্ষের তরফে ওই চার জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অন্য দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়েরই পড়ুয়া। সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানদের ঘটনার কথা জানিয়ে দু’জনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে প্রায় বেহুঁশ অবস্থায় পাওয়া যায় অন্য এক পড়ুয়াকে। তাঁকে সহপাঠীরাই বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়-চত্বরে মদ-মাদক সেবন, বহিরাগতদের দাপাদাপি-সহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মূলত সেগুলোয় রাশ টানতেই নজর-ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ চলছে। কিন্তু এ দিন তিন ফ্যাকাল্টির ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দেননি। বৈঠকের শুরুতেই তাঁরা স্মারকলিপি দিয়ে জানান, ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা, পরিচয়পত্রের মতো নজরদারির কোনও ব্যবস্থা যেন চালু না-হয়। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে তাঁরা মঙ্গল ও বুধবার ক্যাম্পাসে গণভোটের আয়োজন করেছেন। সেই বিষয়ে ব্যস্ত বলেই এই বৈঠকে থাকতে পারছেন না। কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা অনুরোধ করেন, এই বৈঠকে যেন কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া না-হয়।
কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনমত তৈরির উপরে জোর দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জুটা-র প্রতিনিধি পার্থপ্রতিম বিশ্বাস। তৃণমূলের শিক্ষক
সংগঠন ওয়েবকুপা-র সম্পাদক ভাস্কর সর্দার এ দিন সিসি ক্যামেরার পক্ষেই সওয়াল করেছেন। তৃণমূলের শিক্ষাকর্মী সংগঠনও তা-ই। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানান, ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুস্থ রাখার জন্য তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে মহিলা নিরাপত্তাকর্মী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে এ দিনের বৈঠকে। তিনি বলেন, ‘‘অন্যান্য বিষয়ে সব পক্ষের মতামত নেওয়া হয়েছে। সেই সব বক্তব্য পর্যালোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই জন্য ফের বৈঠক হবে।’’