সাজগোজ: চলছে সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতি। শুক্রবার, দমদম মতিঝিল গার্লস হাইস্কুলে। নিজস্ব চিত্র
কোথাও এক ক্যাম্পাসে চলে এল দু’টি সরস্বতী মূর্তি, কোথাও পুজো মণ্ডপের রং কেন গেরুয়া, তা নিয়ে বাধল বচসা। কোথাও আবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন পড়ুয়ারা। বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ সব নিয়েই উত্তেজনা ছড়াল শহরের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
উত্তর কলকাতার জয়পুরিয়া কলেজে গত বছর থেকে কলেজের কমিটি সরস্বতী পুজো করছে। এ বারও তারা কলেজে মণ্ডপ তৈরির করে ফেলেছিল। বৃহস্পতিবার সেই মণ্ডপের রং নিয়ে বিবাদে জড়ান পড়ুয়ারা। তাঁদের এক জনের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাউকে কমিটিতে না রেখে কলেজ পুজো করছে। সেই মণ্ডপের রং আবার গেরুয়া। আমরা এই ভাবে পুজো করতে দেব না।’’ অভিযোগ, সমস্যা শুনতে এলে কলেজের কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে তাঁদের বিবাদ শুরু হয়। কলেজের পাহাড়ায় থাকা শ্যামপুকুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কলেজের কমিটি আপাতত পুজো স্থগিত রাখার পক্ষে মত দিয়েছে অধ্যক্ষের কাছে।
কলেজ সূত্রের বক্তব্য, ছাত্র বিবাদের জেরে সরকারি ভাবে ছাত্র সংসদই তুলে দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা অধ্যক্ষের নেতৃত্বে গত কয়েক বছর ধরে সরস্বতী পুজো করছেন। সেই কমিটির সদস্যদের দাবি, হাতে টাকা যাচ্ছে না বলেই ইউনিয়নের নাম করে কিছু পড়ুয়া ঝামেলা পাকাচ্ছেন। অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করব না।’’ কলেজের এক শিক্ষক অবশ্য বলছেন, ‘‘ইউনিয়নই তো নেই, ছাত্র প্রতিনিধি কাদের নেব?’’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিপুর ক্যাম্পাসে শুক্রবার সরস্বতী পুজো ঘিরেই উত্তেজনা ছড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গত বছর থেকে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ঠিক হয় প্রতিটি ক্যাম্পাসে একটি করে পুজো হবে। খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের মাধ্যমে আসবে। সেই মতো কেন্দ্রীয় পুজোটির মণ্ডপ হয়ে যায়। প্রতিমাও আনতে যান কয়েক জন। তারই মধ্যে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে আর একটি পুজো হচ্ছে। মূর্তি বসেছে। এই পুজোটি নিয়ে ফেসবুকে আপডেটও পড়তে শুরু করেছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে খবর, তৃণমূল ছাত্র পরিষদে অন্তর্দ্বন্দ্বেই এই ঘটনা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) রাজ্য সহ-সভানেত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেত্রী রুমানা আখতার বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। মুক্ত মঞ্চের ওই মূর্তি হস্টেলে নিয়ে যাওয়া হবে।’’
পুজো ঘিরে জটিলতা হয় দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজেও। সেখানে কর্তৃপক্ষকে বাদ দিয়েই পড়ুয়াদের একাংশ পুজো করতে চেলেছেন বলে তাঁদের দাবি। কলেজের টিএমসিপি নেত্রী স্নিগ্ধা সাহা বলেন, ‘‘কলেজ সহযোগিতা করছে না। তাই আমরাই পুজো করছি।’’