—প্রতীকী চিত্র।
প্রবল তাপপ্রবাহ থেকে ঝড়বৃষ্টি বেশ কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে শহরবাসীকে। তবে এতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে দমদম। কারণ, বৃষ্টি ও রোদে মশার বংশবৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তাই এই সময় থেকেই মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজরদারি অভিযান শুরু করেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা।
তবে এতে অবশ্য বাসিন্দাদের চিন্তা দূর হচ্ছে না। তাঁদের কথায়, ‘‘দমদম, দক্ষিণ দমদম এলাকায় এক দিকে সচেতনতার অভাব, অন্য দিকে অব্যবহৃত কারখানা এলাকা, মেট্রো প্রকল্প এলাকা, রেলের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে শুরু করে নির্মীয়মাণ বাড়ি ঘিরে মশার বংশবৃদ্ধির আশঙ্কা থাকছে। পুর এলাকায় প্রতি বছরই মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনিক প্রচেষ্টা থাকলেও কাজের কাজ কিছু হয় না।’’ দমদমের বাসিন্দা মিতা সাহার কথায়, ‘‘এমন গরমে এই বৃষ্টি স্বস্তি দিয়েছে। তবে রোদ-বৃষ্টি মশার বংশবৃদ্ধির পক্ষে অনুকূল। তাই এই সময়ে নিয়ন্ত্রণ জরুরি।’’
দুই পুরসভার পুর কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, চলতি বছরে শুরু থেকেই মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বা ‘সুডা’র নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই কাজ চলছে। গত বছরে রোগের প্রকোপ দেখা গিয়েছে, এমন সব জায়গা চিহ্নিত করে অভিযান হয়েছে। পাশাপাশি আবাসন, বহুতলের বাসিন্দা ও নির্মাণকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরে দমদমের এই দুই পুর এলাকা মিলিয়ে সাড়ে আট হাজার বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। মৃত্যু হয় নয় জনের। চলতি বছরেও প্রথম কয়েক মাসে বেশ কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট জানান, কোনও ভাবেই যাতে জল না জমতে পারে, সেই লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই অভিযান করা হয়েছে। দক্ষিণ দমদমেও জায়গা চিহ্নিত করে অভিযান চালানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও জেসপ কারখানা, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে নিচু এলাকা, মেট্রো প্রকল্প থেকে শুরু করে রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় জল জমার প্রবণতা থাকছেই বলে অভিযোগ। এক বাসিন্দা অশোক মণ্ডলের কথায়, ‘‘নির্বাচনে কত প্রতিশ্রুতি শুনি। এ বার অন্তত মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সুসংহত পরিকল্পনা তৈরি হোক।’’
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস জানান, চলতি বছরে শুরু থেকেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। অত্যধিক গরমের মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতেও যাতে মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেই কারণে কোথাও জল জমছে কি না তা দেখতে, অথবা জল জমলেও তা সরাতে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।