ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।—ফাইল চিত্র।
প্রায় তিন মাস ধরে নাগাড়ে চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে এসপ্লানেড মেট্রো স্টেশনের নীচে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গপথের বাধা ঘোচাতে পারলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে সেই বাধা দূর করা গেলেও ফিরতি পথে ফের দু’টি সুড়ঙ্গ কাটার কাজ করতে হচ্ছে মেট্রোকে। এসপ্লানেড মেট্রো স্টেশনের রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ সংলগ্ন প্রবেশপথের নীচে ‘এইচ’ আকৃতির ইস্পাতের জোড়া খুঁটিকে (স্টিল জয়েস্ট) কেটে পরিষ্কার করার জন্য ওই কাজ করতে হচ্ছে।
মেট্রোর এক কর্তা জানান, এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ অভিমুখে টিবিএম (টানেল বোরিং মেশিন) চালানোর আগে একটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে চান তাঁরা। তা হল, জওহরলাল নেহরু রোডের দু’দিকে মেট্রোর প্রবেশপথে আর কোথাও ইস্পাতের খুঁটি মাটির গভীর পর্যন্ত গিয়েছে কি না।
মেট্রো সূত্রের খবর, চার দশক আগে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর এসপ্লানেড স্টেশন তৈরির সময়ে এস এন ব্যানার্জি রোড ও রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে গাড়ি যাওয়ার জন্য ইস্পাতের পাত দিয়ে সেতু তৈরি করা হয়েছিল। ওই সেতুর ভার রাখার জন্য নীচে ইস্পাতের খুঁটি দেওয়া হয়েছিল। পরে মেট্রো স্টেশন তৈরি হয়ে গেলে উপর থেকে খুঁটিগুলি কেটে দেওয়া হলেও মাটির ভিতরের অংশটি কাটা যায়নি। সেই সব খুঁটিই সম্প্রতি কেটে পরিষ্কার করতে পাইলট সুড়ঙ্গ খুঁড়তে হয়েছে মেট্রোকে। প্রথম পর্যায়ে তিনটি শাখা সুড়ঙ্গ-সহ প্রায় ৮০ মিটার দীর্ঘ পাইলট সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এসপ্লানেড মেট্রো স্টেশনের নীচে থাকা ওই বাধা সরানোর কাজ শেষ হয়েছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, পুরনো এসপ্লানেড স্টেশনের ভূগর্ভস্থ প্রবেশপথ তৈরির সময়ে মাটির চাপ ধরে রাখার জন্য প্রায় ১৬ মিটার গভীর ইস্পাতের খুঁটি (স্টিল জয়েস্ট বা এইচ পাইল) ব্যবহার করা হয়েছিল। এমন আট-ন’টি ইস্পাতের খুঁটি রাস্তার দু’প্রান্তে এখনও রয়ে গিয়েছে। তবে মেট্রোকর্তাদের আশা, ওই খুঁটিগুলি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ পর্যন্ত না পৌঁছনোয় তেমন সমস্যা না-ও হতে পারে। তবু নিশ্চিত হওয়ার জন্য এস এন ব্যানার্জি রোডের একাংশ খুঁড়ে ‘পাইল ইন্টিগ্রিটি টেস্ট’ (পিআইটি) করতে চান তাঁরা। ওই পরীক্ষার ফল ইতিবাচক হলে নতুন বছরে জানুয়ারির মাঝামাঝি শিয়ালদহ অভিমুখে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করবে মেট্রো।
মেট্রো স্টেশনের নীচে বাধা দূর হওয়ায় আপাতত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্রপাতি বার করে আনার পাশাপাশি নরম কংক্রিট দিয়ে পাইলট সুড়ঙ্গ ধাপে ধাপে বুজিয়ে ফেলার কাজ করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।