গতিহারা: কেষ্টপুরের কাছে পলি জমে ক্রমশ মজে যাচ্ছে খাল। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
কালভার্টের নীচে বয়ে চলেছে খালের জল। দু’পাশে পলি জমে মজে গিয়েছে। খালের আশপাশ আবর্জনা-সহ নানা কারণে ক্রমেই সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছে। সেখানেই ইচ্ছেমতো যত্রতত্র দাঁড় করানো থাকে মোটর সংস্থার গাড়ি বা মোটরবাইক। অভিযোগ, নিজেদের সম্পত্তির এমন দুরবস্থা এবং বেহাত হয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখেও দেখছে না পূর্ত দফতর। যার জেরে অনেকেই ওই এলাকা আগামী দিনে শ্রীভূমির মতো হয়ে যাবে কি না, তা ভেবে প্রমাদ গুনছেন। ভিআইপি রোডের ধারে কেষ্টপুর থেকে বাগুইআটির দিকে এগোতে গেলেই চোখে পড়বে, কী ভাবে সেখানে খাল সরু হচ্ছে এবং খালের পাড় দখল হয়ে যাচ্ছে।
কয়েক বছর আগে ভিআইপি রোডের ধারে শ্রীভূমিতে নয়ানজুলি ভরাট করে নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে তোলপাড় হয়। কেষ্টপুর থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত খালের আশপাশে এখন জমে গিয়েছে আবর্জনা। দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারের অভাবে জমেছে পলিও। যে কারণে আশপাশের এলাকার জল ওই খালে এসে পড়লেও তার প্রবাহের গতি অতি শ্লথ। খালটি বাগজোলা খালের সঙ্গে যুক্ত। সেটির মাধ্যমেই স্থানীয় নারায়ণতলা এলাকার বিস্তীর্ণ অংশের বর্জ্য জল কেষ্টপুরের বাগজোলা খালে গিয়ে পড়ে।
স্থানীয়েরা জানান, ভিআইপি রোড তৈরির সময় থেকেই রয়েছে ওই খালটি। ধীরে ধীরে খালের আশপাশে বসতি বেড়েছে। ভিআইপি রোডের দিক থেকে খাল টপকে গন্তব্যে পৌঁছতে ইচ্ছেমতো কালভার্টও তৈরি করা হয়েছে। ফলে জলের প্রবাহ বাধা পেয়ে, পলি জমে বুজে যাচ্ছে খালের বিভিন্ন অংশ। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, বিগত কয়েক বছর ধরেই কেষ্টপুর থেকে কলেজ মোড়ের আশপাশে বিভিন্ন গাড়ি সংস্থা, রোগ নির্ণায়ক কেন্দ্র, একাধিক আবাসন গড়ে উঠেছে। যার ফলে খালের আশপাশের বেশ কিছু জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা গেল, খালের আশপাশ জুড়ে সার দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে গাড়ি ও মোটরবাইক। সেগুলির মধ্যে কিছু বিকল গাড়ি ও বাইকও রয়েছে। জায়গাটির চেহারা হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকটা গুদামের মতোই। খালে ভাসছে আবর্জনা, প্লাস্টিক। কোথাও কোথাও খালের ধার ঘেঁষে থাকা জায়গাও ব্যবহার করা হচ্ছে গাড়ি ও বাইক রাখার জন্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু কিছু অংশে খালের পাড় ভরাট করে দিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।
পূর্ত দফতর সমস্যার কথা স্বীকার করলেও তাদের দাবি, খালের পাড় ভরাট হয়নি। তবে তাদের জমি যে কোনও ধরনের অনুমতি ছাড়াই বহুল ব্যবহার হচ্ছে, তা মেনে নিয়েছেন আধিকারিকেরা। তাঁরা জানান, ওই এলাকার খোলনলচে বদলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। খালটি গভীর ভাবে কাটারও পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে ওই এলাকার সৌন্দর্যায়নের কথাও ভাবা হয়েছে। সব কিছুর জন্য ডিপিআর তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুত বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতরের শীর্ষ স্তরে আলোচনা করা হবে বলেও আধিকারিকেরা জানান।