সন্ত্রাসের অভিযোগের বিরাম নেই শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোম ও মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃণমূলের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।
মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ পঞ্চসায়রে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে এক সিপিএম কর্মীকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ দিন সন্ধ্যায় ওই অঞ্চলের শহিদ স্মৃতি এলাকায় নির্বাচনী প্রচার সভা ছিল সিপিএমের। অভিযোগ, সেই সভা সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। বাপি মণ্ডল নামে এক সিপিএম কর্মীকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। ওই কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় সিপিএমের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রাতে ঘটনাস্থলে যান প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকায় শাসক দল পায়ের তলায় জমি পাচ্ছে না। তাই রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মত হামলা চালানো শুরু করেছে। আমরাও প্রতিরোধে নেমেছি।’’ কান্তিবাবুর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূলের সম্পাদক পিনাকী দেবের দাবি, ‘‘ওখানে আমাদের কেউ ছিল না। হয়তো ওদের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই এটা ঘটেছে।’’
আরও একটি ঘটনাতে সোনারপুর থানায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন কান্তিবাবুরা। অভিযোগ, সোমবার রাতে শাসক দলের হাতে আক্রান্ত হন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী বাবু শিকারি। যদিও ওই ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের সোনারপুর (উত্তর)-এর বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম। সিপিএমের আরও অভিযোগ, কলকাতার ১০২ এবং ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ও রিঙ্কু নস্করের পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিকে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী সাবিউন্নেসা হক খান। ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সানা আহমেদ।
পুরভোটের আগে ধারাবাহিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে এ দিন পথে নেমেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন-সহ বিশিষ্টরা। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে থেকে এক্সাইড মোড় হয়ে ফের অ্যাকাডেমিতেই ফিরে যায় তাঁদের মিছিল। সন্ত্রাসের অভিযোগ অবশ্য অব্যাহতই আছে।