ধর্মঘটে এ বার শামিল হলুদ ট্যাক্সিও

মঙ্গলবার হলুদ ট্যাক্সির একাংশও ধর্মঘট ডেকেছে। কলকাতায় চলা প্রায় ১২০০০ হলুদ ট্যাক্সির মধ্যে ধর্মঘটীদের সংখ্যা প্রায় ৩০০০।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৬
Share:

ভোগান্তি: ধর্মঘটে বন্ধ অ্যাপ-ক্যাব। হলুদ ট্যাক্সি দেখামাত্র তা ধরতে দৌড় লাগালেন অপেক্ষারত যাত্রীরা। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

বাসের ভিড় এবং হলুদ ট্যাক্সির ‘দুর্ব্যবহার’ ও প্রত্যাখ্যানের ঝঞ্ঝাট এড়াতে এখন অনেকেই অ্যাপ-ক্যাবের উপরে নির্ভরশীল। সোমবার সকাল থেকে ক্যাব মালিকেরা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করায় সেই নাগরিকেরা সমস্যায় পড়েছেন। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে ভিড় বেড়েছে মেট্রোয়। চাহিদা বাড়ায় হলুদ ট্যাক্সির চালকেরাও নিজেদের ‘মর্জিমাফিক’ ভাড়া হেঁকেছেন বলে অভিযোগ। আজ, মঙ্গলবার ভোগান্তি আরও বাড়ার আশঙ্কা।

Advertisement

মঙ্গলবার হলুদ ট্যাক্সির একাংশও ধর্মঘট ডেকেছে। কলকাতায় চলা প্রায় ১২০০০ হলুদ ট্যাক্সির মধ্যে ধর্মঘটীদের সংখ্যা প্রায় ৩০০০। ধর্মঘটের ডাক দেওয়া পশ্চিমবঙ্গ ট্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যরা অবশ্য রাস্তায় নেমে অন্য ট্যাক্সিচালকদের বাধা দেবেন না বলে জানানো হয়েছে।

বিমানবন্দর, হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশনে যাত্রীরা হয়রানির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ। এ দিন লম্বা লাইন চোখে পড়ে বিমানবন্দর এবং রেলস্টেশনের প্রি-পেড ট্যাক্সির বুথে। মঙ্গলবার ট্যাক্সির সংখ্যা আরও কমে গেলে বিমানবন্দরে আরও সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা। সোমবার সকালে ভিন্‌ রাজ্য থেকে শহরে আসা এক প্রবাসী বাঙালি বলেন, ‘‘বিমানবন্দরে নেমে দেখি, একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা বুকিংই নিচ্ছে না। অন্য একটি সংস্থা বুকিং নিচ্ছে, কিন্তু ভাড়া অস্বাভাবিক বেশি দেখাচ্ছে।’’ যে ভলভো বাসগুলি বিমানবন্দর থেকে যাতায়াত করে, এ দিন যাত্রীদের সুবিধার কথা ভেবে সেগুলি টার্মিনালের সামনে গিয়ে যাত্রীদের ডেকে ডেকে তুলেছে। মঙ্গলবার আরও বেশি সংখ্যায় ভলভো বাস রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও বেশি সংখ্যায় বাস চালানোর কথা জানিয়েছে রাজ্য পরিবহণ নিগম।

Advertisement

আশঙ্কা, শুধু বিমানবন্দর নয়, সোমবারের মতো মঙ্গলবারও ভুগতে হবে সাধারণ মানুষকে। সোমবার ভোরে গড়িয়া থেকে সাঁতরাগাছি যাওয়ার জন্য এক যুবকের কাছ থেকে অ্যাপ-ক্যাবের তরফে ৯০০ টাকা চাওয়া হয়েছে! চাহিদা ও জোগানের তত্ত্বের উপরে নির্ভরশীল অ্যাপ-ক্যাবের এই ভাড়াই ছিল সোমবারের শহরে ক্যাব পরিস্থিতির প্রতীকী চিত্র! অভিযোগ, যে অ্যাপ-ক্যাবগুলি ধর্মঘট উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছিল, তাদের চালকদের গাড়ি চালাতে বাধা দিয়েছেন ধর্মঘট সমর্থকেরা। ধর্মতলায় গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে।

উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রেনযাত্রীদের অভিযোগ, ভোরবেলা শিয়ালদহে পৌঁছে ঠিক মতো ট্যাক্সি পাওয়া যায় না। অ্যাপ-ক্যাবই ভরসা তাঁদের। এ দিন ভোরে পৌঁছে অনেককেই নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে এ দিন ভোরে শহরে পৌঁছনো এক যাত্রীর সঙ্গে অসুস্থ আত্মীয় ছিলেন। তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাপ-ক্যাব মেলেনি। ওই যাত্রীর কথায়, ‘‘হলুদ ট্যাক্সিতে প্রচুর বেশি ভাড়া দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছি।’’

উল্টোডাঙা থেকে বিমানবন্দর রুটে শুক্রবার রাত থেকে অটো চলাচল বন্ধ থাকায় এ দিন দুর্ভোগ আরও বাড়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। পাশাপাশি, নিউ টাউন এবং পাঁচ নম্বর সেক্টরে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের কর্মীরাও এ দিন সমস্যায় পড়েন।

অ্যাপ-ক্যাব চলতে বাধা দেওয়া বা ভাঙচুরের কথা অস্বীকার করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘যাঁরা গাড়ি নামাতে চেয়েছেন বা গাড়ি নামিয়েছেন তাঁদের বন্‌ধ সমর্থকেরা বাধা দেননি। যাত্রী হয়রানি যাতে না হয়, তার জন্য হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশনে আমাদের লোক ছিল। তাঁরা যাত্রীদের অন্য গাড়ি ভাড়া করতে সাহায্য করেছেন।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement