কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।—ফাইল চিত্র।
তিনি নিজে করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু কোভিড মোকাবিলায় বাহিনীর মনোবলে যাতে চিড় না-ধরে, তার জন্য সচেষ্ট হলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
সোমবার এক বার্তায় কমিশনার নিজের শারীরিক অবস্থার কথা জানানোর পাশাপাশি করোনা নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হতে বাহিনীকে বারণ করেছেন। পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ অসুস্থ বোধ করলে যেন তিনি সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসককে দেখান। কমিশনার এ দিনও জানান, পুলিশকর্মীদের জন্য কলকাতা পুলিশের ওয়েলফেয়ার সেল নিরন্তর কাজ করে চলেছে। ‘নিরাময়’ অ্যাপের মাধ্যমে তারা বাহিনীতে আক্রান্ত কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বাইরে কাজ করার সময়ে পুলিশকর্মীরা যাতে মাস্ক, গ্লাভস, ফেস শিল্ড এবং স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেন, সেই পরামর্শ দিয়েছেন সিপি। নিয়মিত ব্যারাক পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি দূরত্ব-বিধি মেনে চলার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন।
গত পাঁচ দিন ধরে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন পুলিশ কমিশনার। মৃদু উপসর্গ থাকলেও বাড়ি থেকেই সামলাচ্ছেন লালবাজারের কাজকর্ম। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, করোনা এবং লকডাউনের মধ্যেও বাহিনীর মনোবল যাতে অটুট থাকে, সে জন্য কমিশনার বার বার বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ছাড়া সামনেই পুজো। অতিমারির পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে পুজো উতরে দেওয়া পুলিশের কাছে চ্যালেঞ্জ। তাই বাহিনীর মনোবল যাতে না-ভাঙে, তাই কমিশনার নিজে আক্রান্ত হয়েও বাড়ি থেকে কাজ করছেন।
এ দিকে, সোমবার পর্যন্ত কলকাতা পুলিশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২১৭। তাঁদের মধ্যে দু’হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেনিয়াপুকুর থানার ওসি অলোক সরকার। গত ১৭ দিন ধরে তিনি বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। সেখানে শনিবার পর্যন্ত একমো সাপোর্টে ছিলেন অলোকবাবু। আপাতত তাঁকে সেখান থেকে বার করে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
অন্য দিকে, সঙ্কটজনক অবস্থায় আছেন কলকাতা পুলিশের আরও তিন জন। গোয়েন্দা বিভাগের হোমবাহাদুর থাপা মিন্টো পার্কের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হরিদেবপুর থানার এএসআই তুষারকান্তি কুলে ভর্তি বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয়েছে। হেডকোয়ার্টার্স বিভাগের এক গাড়িচালক নিলয় হালদারের অবস্থাও সঙ্কটজনক।