ছবি: সংগৃহীত
কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ এবং তা নষ্ট করার জন্য রাজ্যে যে ক’টি ‘কমন বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট ফেসিলিটি’ (সিবিডব্লিউটিএফ) কাজ করছে, তাদের মধ্যে দু’টির টাকা বকেয়া পড়েছিল। কোভিড-বর্জ্য সরাতে যাতে দেরি না-হয়, সে কারণে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ওই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের সমস্ত কোভিড হাসপাতাল এবং আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ করছে সিবিডব্লিউটিএফ। এমনকি সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (সারি) ইউনিটে যে বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে, তা-ও একই সঙ্গে সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, একটি সিবিডব্লিউটিএফের কলকাতা-সহ রাজ্যের মোট ২৫টি হাসপাতাল এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের জন্য টাকা বকেয়া ছিল। আর একটির বকেয়া ছিল ১৫টি হাসপাতাল থেকে। সেগুলির সিংহভাগই আবার কলকাতার। দফতরের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোভিড-বর্জ্যের মধ্যে পিপিই, গ্লাভস, মাস্কের পরিমাণই সব চেয়ে বেশি। দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘মার্চ মাস থেকেই কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। তা মেনেই কাজ হচ্ছে।’’
গত মার্চেই কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ এবং তা নষ্টের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম বেঁধে দিয়েছিল। পর্ষদের তরফে এ-ও বলা হয়েছিল, সংক্রমণের গতি পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট নিয়মে নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিবর্তন আনা হতে পারে। কত পরিমাণে কোভিড-বর্জ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও নষ্ট করা হচ্ছে, তার জন্য পৃথক তথ্যভাণ্ডার তৈরির নির্দেশও দিয়েছিল তারা।
যদিও এই বর্জ্যের পরিমাণ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কোভিড-বর্জ্য ঠিক মতো সংগ্রহের পদ্ধতি ও তার পরিমাণ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। জাতীয় পরিবেশ আদালতে এ নিয়ে মামলাও হয়েছে। সেখানে রাজ্যের তরফে কত বর্জ্য সংগ্রহ ও নষ্ট করা হয়েছে, তার হিসেব দেওয়া হয়েছে। মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘কোভিড-বর্জ্যের যে হিসেব দিয়েছে রাজ্য, তা কখনওই হতে পারে না। যদি সমস্ত আইসোলেশন ওয়ার্ড, হোম কোয়রান্টিন এবং হাসপাতালের সংখ্যা দেখা যায়, তা হলে ওই বর্জ্যের পরিমাণ আরও বেশি হতে বাধ্য।’’ পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত এ বিষয়ে বলেন, ‘‘কোভিড-বর্জ্যের মাধ্যমেও যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সেই প্রচারে আরও জোর দেওয়া দরকার। এমনিতেই কোভিড নিয়ে ভ্রান্ত ধারণার শেষ নেই। সেখানে কোভিড-বর্জ্যের বিপদ সম্পর্কে ঠিক তথ্য জনসাধারণকে জানানো প্রয়োজন।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)