কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ।—ফাইল চিত্র
রোগী কখনও খাটের তলায়, আবার কখনও বলিশ-কম্বল নিয়ে একতলা থেকে আর একতলায় দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। আর তার পিছন পিপিই পরে দৌড়চ্ছেন নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত দু’দিন ধরে রোগীর সঙ্গে চিকিৎসাকর্মীদের এ রকমই লুকোচুরি চলছে। ছবিটা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ব্লকের। এই ব্লকটি কোভিড হাসপাতাল। আর এই রোগীকে নিয়ে নাজেহাল হাসপাতালের সবাই।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ দিন আগে ভর্তি হয়েছিলেন ওই রোগী। করোনা-আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার সূত্রে তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং সেই নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তার পরই তাঁকে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের পুরুষদের ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শুরু থেকেই তাঁর ব্যবহারে অসংলগ্নতা নজরে আসে চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের। কিন্তু সেই অসংলগ্নতা দু’দিনে মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়। কখনও তিনি ওয়ার্ড ছেড়ে বেরতে চেষ্টা করেন। কখনও বা আবার বালিশ-বিছানা নিয়ে খাটের তলায় লুকিয় পড়েন। কখনও একতলা থেকে আর এক তলায় দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। তাঁকে সামলাতে গিয়ে নাজেহাল চিকিৎসকরা। রবিবার তিনি হঠাৎই সুপার স্পেশালিটি ব্লকের ছাদে উঠে যান। তার পিছন পিছন তাঁকে ধরতে যান চিকিৎসাকর্মীরা। তাঁদের অবাক করে দিয়ে হঠাৎ ছাদ থেকে লাফ মারার উপক্রম করেন রোগী। তাঁকে রোখার চেষ্টা করলে তিনি চিকিৎসাকর্মীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ছাদের পাঁচিল টপকে যান। তার পর অবশ্য লাফ দিয়ে তিনি ছাদের নীচের একটি কার্নিশে নেমে পড়েন। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে তাঁকে বুঝিয়েসুজিয়ে ওয়ার্ডে ফেরত আনা হয়। মেডিক্যাল কলেজের কোভিড হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা এক কর্তা ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। এ ধরনের রোগীদের আলাদা রাখা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের এখানে মানসিক ব্যক্তি কোভিড আক্রান্ত হলে, তাঁদের আলাদা করে রাখার কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই তাঁকে সকলের সঙ্গেই রাখতে হচ্ছে।’’
এই রোগীকে নিয়ে নাজেহাল চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্মীদের একটাই প্রার্থনা, কোনও রকম দুর্ঘটনা ছাড়া ভালয় ভালয় তাঁকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো।
আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে আক্রান্ত ৩৭১, বীরভূম এবং কোচবিহারে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংক্রমণ
আরও পড়ুন: ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাজ্যের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী