নিকাশির পথ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ হাওড়া স্টেশনে

প্রায় আট মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না কর্মীরা। প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামলেন হাওড়া স্টেশনের বর্জ্য শোধনাগার এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা ইটিপি-র ঠিকা কর্মীরা।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩৪
Share:

অধিকাংশ যন্ত্র খারাপ হয়ে পড়ে প্রায় ছ’মাস। বর্জ্য শোধন করে গঙ্গায় ফেলার কথা। তা-ও কার্যত মানা হচ্ছে না। পাশাপাশি, প্রায় আট মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না কর্মীরা। প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামলেন হাওড়া স্টেশনের বর্জ্য শোধনাগার এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা ইটিপি-র ঠিকা কর্মীরা।

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় হাওড়া স্টেশনের দু’টি কমপ্লেক্সের বর্জ্য শোধনের জন্য ১৯৯৪-এ গঙ্গার পাড়ে একটি বর্জ্য শোধনাগার তৈরি হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে কাজ শুরু হয়। রেল সূত্রে খবর, দু’টি কমপ্লেক্সের বর্জ্য পাইপলাইন দিয়ে ওই শোধনাগারে আসার পরে নানা পদ্ধতিতে শোধন করে গঙ্গায় ফেলা হয়। রেল সূত্রে খবর, প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রেল প্রথম থেকেই ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বছরের পর বছর ঠিক ভাবে পাম্প রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি।
খারাপ হয়ে গিয়েছে তিনটি সাবমার্সিবল পাম্পের দু’টিই। কাজ করছে না আরও বহু যন্ত্র। ফলে অভিযোগ, ঠিক মতো বর্জ্য শোধন না করে দূষিত জলই সরাসরি ফেলা হচ্ছে গঙ্গায়।

ওই প্লান্টের সুপারভাইজার গাঁধীচরণ বেতাল বলেন, ‘‘২০১৩-এ রেল নতুন ঠিকাদার সংস্থা নিযুক্ত করার পরেই সমস্যা শুরু হয়।’’ কর্মীদের অভিযোগ, সব জেনেও ওই সংস্থাকেই ফের বরাত দেওয়া হয় ২০১৬ সালে। তার উপরে সংস্থার মালিক জানুয়ারি থেকে কর্মীদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই রেলকে শিক্ষা দিতে এ দিন স্টেশন থেকে প্লান্টে বর্জ্য আসার সব পথ বন্ধ করে দেন ক্ষুব্ধ কর্মীরা।

Advertisement

কিন্তু যেখানে নির্মল গঙ্গা অভিযানের জন্য কেন্দ্র প্রচার চালাচ্ছে, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত একটি রেল স্টেশনের বর্জ্য সরাসরি গঙ্গায় যায় কী করে? এটি ক্ষমাহীন অপরাধ বলে মনে করছেন নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া স্টেশনের মতো ব্যস্ত জায়গার বর্জ্য শোধন না করে গঙ্গায় ফেলা মারাত্মক অপরাধ।’’

এ দিকে কর্মীদের আন্দোলনের জেরে বন্ধ শোধনাগার। তার প্রভাবও হাওড়া স্টেশনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রেলের। বর্জ্য বেরোনোর রাস্তা না পেলে তা ব্যাক ফ্লো করে স্টেশনের ভিতরে চলে এলে যাত্রী পরিষেবায় মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। ওই শোধনাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্লান্টের সব যন্ত্র খারাপ হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। কর্মীদের বেতনের বিষয়টি সামনের সপ্তাহেই মিটে যাবে বলে মনে হয়। তার আগে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement