প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ফের একটি রাজনৈতিক সমাবেশ। ফের পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় অভিভাবকেরা। যার জেরে আবারও ক্ষতি হতে চলেছে একটি শিক্ষাদিবসের। তবে, বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুল আজ, শুক্রবার, ২১ জুলাই উপলক্ষে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সরকারি, সরকার-পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি খোলা রয়েছে। তেমনই কিছু স্কুল জানাচ্ছে, তাদের পুরো ক্লাস হবে। কিছু স্কুলে আবার তৃতীয় অথবা চতুর্থ পিরিয়ডের পরে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দিয়ে ছুটি ঘোষণা হবে।
ডিপিএস রুবি পার্ক, সাউথ পয়েন্ট, শ্রী শিক্ষায়তনের অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, ২১ জুলাই তাঁদের স্কুল অনলাইনে চলবে। শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনার সময়ে অনলাইন ক্লাস চলায় পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা ওই পদ্ধতিতে ভালই অভ্যস্ত হয়েছেন। এ রকম দিনে অনলাইনে পড়ানোই সুবিধাজনক।’’ রামমোহন মিশন স্কুলের প্রাতঃ বিভাগের ক্লাস স্বাভাবিক নিয়মেই হবে। যদিও দিবা বিভাগে ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস।
বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুলে অনলাইন ক্লাস হলেও সরকারি স্কুলগুলিতে অনলাইন ক্লাসের নির্দেশিকা নেই। শিক্ষকদের একাংশের মতে, এই দিনগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার খুব কম থাকে। ফলে অনলাইন ক্লাস হলে পড়ুয়ারা উপকৃতই হবে। যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুল খোলা থাকলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম থাকবে। তেমন বুঝলে তৃতীয় বা চতুর্থ পিরিয়ডে ছুটি দেওয়া যেতে পারে। এই সব দিনে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার যে কম থাকে, তা মানছেন মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে। তিনি বলেন, ‘‘তৃতীয় বা চতুর্থ পিরিয়ডের পরে স্কুল ছুটি দেওয়া হবে। কিন্তু এমন দিনে মিড-ডে মিলের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়। ফলে বিকল্প মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করা হতে পারে।’’
কলকাতার এই সব সরকারি স্কুলের বেশির ভাগ শিক্ষক জানাচ্ছেন, কোনও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মিড-ডে মিল রান্না করে গাড়িতে করে এনে একাধিক স্কুলে বণ্টন করা হয়। এই ধরনের সভা-সমাবেশের দিনে মিড-ডে মিলের গাড়ি অনেক সময়ে যানজটে আটকে স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়। এর ফলে সমস্যা বাড়ে।
অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, এমন দিনে কেন অনলাইন ক্লাস করানো হবে না? হিন্দু স্কুলের একাধিক অভিভাবকের মতে, এমন দিনে তাঁরা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চান না। তাঁদের দাবি, করোনায় দীর্ঘদিন অনলাইন ক্লাস হয়েছে। শহরের স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়ার বাড়িতে স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট সংযোগ আছে। তা হলে কেন অনলাইন ক্লাস হবে না?
শিক্ষক নেতা তথা প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নবকুমার কর্মকারের মতে, ‘‘ছুটি দিতে পারবে না সরকারি স্কুল। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি স্কুলের মতোই অনলাইন ক্লাসের নির্দেশিকা যদি আগে জারি করা যায়, তা হলে সবারই সুবিধা হয়। কারণ, পড়ুয়া, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের অনেকেরই স্কুলে আসতে এবং ফিরতে অসুবিধা হয়।’’