Presidency University

উপাচার্য ঘেরাও, বিক্ষোভের জেরে ব্যাহত ক্লাস

এ দিন বিক্ষোভের জেরে কয়েকটি বিষয়ে পঠনপাঠনও বন্ধ হয়ে যায় প্রেসিডেন্সিতে। সূত্রের খবর এ দিন প্রেসিডেন্সির জীবন বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ক্লাস বন্ধ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৯
Share:

বিরোধিতা: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে নিউ টাউনের আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হলেন পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁরা সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী গান, আবৃত্তি করেন। পরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ টাউন, তালতলা এবং পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা নিউ টাউনের রাস্তায় মানববন্ধন করেন। নিজস্ব চিত্র

হিন্দু হস্টেলের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার ঘরের সামনে বিক্ষোভ চলল মঙ্গলবারও। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, এ দিন তাঁদের সঙ্গে কয়েক জন শিক্ষকের বৈঠক হয়। ওই শিক্ষকদের তাঁরা নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা জানিয়েছেন। ওই শিক্ষকেরা সন্ধ্যার পরে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি।

Advertisement

এ দিন বিক্ষোভের জেরে কয়েকটি বিষয়ে পঠনপাঠনও বন্ধ হয়ে যায় প্রেসিডেন্সিতে। সূত্রের খবর এ দিন প্রেসিডেন্সির জীবন বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ক্লাস বন্ধ ছিল। অঙ্ক এবং পারফর্মিং আর্টসেরও কোনও ক্লাস হয়নি। বিক্ষোভরত ছাত্রেরা জানান, বিক্ষোভের জেরে তাঁরা ক্লাস করাতে পারছেন না বলে শিক্ষকেরা তাঁদের জানিয়েছেন। তবে ছাত্রদের দাবি, শিক্ষকদের অভিযোগ ঠিক নয়। এক ছাত্র বলেন, ‘‘আমরা চাই না আন্দোলনের জেরে প্রেসিডেন্সির কোনও ক্লাস বন্ধ থাকুক। বা দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ বন্ধ থাকুক। প্রেসিডেন্সির পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করার বিন্দুমাত্র অভিপ্রায় আমাদের নেই। আমরা শুধু আমাদের দাবিদাওয়ার কথা উপাচার্যকে জানাতে চাই। এই নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছি।’’

এ দিকে সোমবার রাতভর ঘেরাও থাকার পরে মঙ্গলবার ভোর ছ’টা নাগাদ উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে বেরিয়ে যান। বিক্ষোভরত এক ছাত্র বলেন, ‘‘আমরা উপাচার্যের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলাম তখনও। উনি কোনও কথা না বলে বেরিয়ে যান। আমরাও বাধা দিইনি।’’

Advertisement

উপাচার্য ভোরবেলা বেরিয়ে গেলেও আবার ফের প্রেসিডেন্সিতে আসেন বেলা ১১টা নাগাদ। তখনও বিক্ষোভ চলছিল উপাচার্যের ঘরের সামনে। এক বিক্ষোভরত ছাত্র বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম উনি ফিরে এসে সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু বলেননি।’’ মঙ্গলবারও রাত পর্যন্ত তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়।

হিন্দু হস্টেলের তিন, চার ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সংস্কার-সহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে হস্টেলের আবাসিকদের এই আন্দোলন মঙ্গলবার পনেরো দিনে পড়ল। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, এই পনেরো দিনে এক বারের জন্যও প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবি মেটাতে কোনও সদিচ্ছা দেখাননি। দিন কয়েক আগে হিন্দু হস্টেলের দাবি দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য। যদিও উপাচার্যের সেই বক্তব্য পছন্দ হয়নি ছাত্রছাত্রীদের। তাঁদের মতে, একতরফা উপাচার্য কথা বলে গিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের

কথা শোনেননি।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানান, এ ধরনের ঘেরাও যুক্তযুক্তি নয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে আগে তিনি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি জানান, ‘‘এ সব আলোচনার টেবিলে বসে মেটানো উচিত। এর জন্য উপাচার্যকে ঘেরাওয়ের দরকার নেই।’’ উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে ফোন ও মেসেজ করলেও তাঁর কাছ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement