হাওড়ায় ট্রেন দেরিতে ঢোকায় মারধর, ভাঙচুর

হামলা চালান স্টেশন ম্যানেজার ও ডেপুটি স্টেশন ম্যানেজারের ঘরে। আরপিএফ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে পাঁচ জনকে আটক করে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২৬
Share:

লন্ডভন্ড: যাত্রীদের বিক্ষোভের জেরে উল্টে গিয়েছে মেটাল ডিটেক্টর দরজা। শনিবার, হাওড়া স্টেশনে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

ট্রেন দেরিতে চলার কারণে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখায় গোলমালের ঘটনা নতুন নয়। এ বার সেই ঘটনাই ঘটল পূর্ব রেলের হাওড়া শাখার মেন লাইনে। যার জেরে শনিবার উত্তেজিত যাত্রীরা চড়াও হলেন চালক এবং গার্ডের উপরে। এর পরে তাঁরা

Advertisement

হামলা চালান স্টেশন ম্যানেজার ও ডেপুটি স্টেশন ম্যানেজারের ঘরে। আরপিএফ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে পাঁচ জনকে আটক করে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

পূর্ব রেল সূত্রের খবর, এ দিন ডাউন লাইনে আরামবাগ লোকাল হাওড়া স্টেশনে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢোকার কথা ছিল। কিন্তু সেটি ঢোকে সকাল ১১টা ২০ মিনিটে। এই ৩৫ মিনিট দেরি হওয়ার কারণ হিসাবে রেলের তরফে দাবি করা হয়, ওই সময়ে আপ কবিগুরু এক্সপ্রেস ও একটি লোকাল ট্রেন হাওড়া থেকে বেরোনোর জন্য আরামবাগ লোকালকে স্টেশনের আউটারে দাঁড় করানো হয়েছিল। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনটি আরামবাগ ছাড়ার পরে এক জায়গায় লেভেল ক্রসিংয়ের গেট খুলে রাখার জন্য ১৫ মিনিট আউটারে দাঁড়িয়ে থাকে। এ ছাড়াও রিষড়া স্টেশনের লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনটি আটকে থাকে আরও ২০ মিনিট।

Advertisement

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ট্রেনটি স্টেশনে ঢুকতেই কেবিন থেকে চালক ও গার্ডকে প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে মারধর করেন উত্তেজিত যাত্রীরা। শুধু তাই নয়, এর পরে প্রায় তিনশো ক্ষুব্ধ যাত্রী দুই ডেপুটি স্টেশন ম্যানেজারের ঘরে ঢুকে টেবিল-চেয়ার ছুড়ে ফেলতে থাকেন তাঁরা। এমনকি ভিআইপি লাউঞ্জের কাচের দরজাও ভাঙচুর করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় টেলিফোন। ছিঁড়ে ফেলা হয় রেলের কাগজপত্র। আক্রমণকারীদের এক জন ডেপুটি এসএমকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনার সময়ে সেখানে উপস্থিত মুরারি কুমার নামে এক রেলকর্মী বল‌েন, ‘‘ওঁরা যে ভাবে চেয়ার টেবিল ছুড়ছিল, তাতে আমরা যে কেউ আহত হতে পারতাম। ছুটে আসা চেয়ার আটকাতে গিয়ে আমার ডান হাতের কড়ে আঙুলে আঘাত লেগেছে।’’

অভিযোগ, এর পরেই আক্রমণকারীরা ছোটেন স্টেশন ম্যানেজার এ বি বর্ধনের ঘরে। গোলমাল শুনে তত ক্ষণে স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তালা দিয়ে দেওয়া হয় ভিআইপি লাউঞ্জের দরজায়। মারমুখী

জনতা লাথি মেরে দুটো দরজারই তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে টেবিলের কাচ ভেঙে চেয়ার-টেবিল উল্টে দেয়। ভেঙে ফেলা হয় ভিআইপি লাউঞ্জের দরজার ও দেওয়ালের কাচ।

স্টেশনে এত আরপিএফ এবং রেল পুলিশ থাকা সত্ত্বেও এই ঘটনা ঘটল কী করে? হাওড়ায় পূর্ব রেলের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ে ফোর্স কম ছিল। পরে বিশাল বাহিনী এসে আক্রমণকারীদের পাঁচ জনকে ধরে ফেলে।’’

ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ দিন সকালে রিষড়া স্টেশনের কাছে লেভেল ক্রসিং গেটে একটি গাড়ি আটকে পড়ে। এর জেরে সকাল ১০টা ৭ মিনিট থেকে ১০টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত ট্রেনও আটকে পড়ে। এই কারণেই দেরিতে চলেছিল ট্রেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement