প্রতীকী ছবি
রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আজ, বুধবার আবার লকডাউন। তাই কলকাতা থেকে বন্ধ থাকবে সমস্ত উড়ান পরিষেবা। এ দিন যাঁদের উড়ানের টিকিট কাটা ছিল, তাঁরা বৃহস্পতিবার বা অন্য কোনও দিনের উড়ানে যাত্রা করতে পারবেন। উড়ান সংস্থাগুলি সেই সুবিধা দিচ্ছে যাত্রীদের। গত শনিবারের লকডাউনের ক্ষেত্রে একেবারে শেষ মুহূর্তে উড়ান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে যাত্রীদের অনেকে খবর পাওয়ার আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছে যান। বুধবারের লকডাউনের কথা যে হেতু আগে থেকেই জানা ছিল, তাই যাত্রীদেরও আগেই তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার আগামী মাসের লকডাউনের সূচি ঘোষণা হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে উড়ান সংস্থাগুলি। তাদের মতে, এর ফলে নতুন করে উড়ান-সূচি তৈরি করতে সময় পাওয়া যাবে। উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকার বিষয়টি নিয়ে এ দিন রাতের দিকে কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, অগস্টে এ রাজ্যে যে ক’দিন লকডাউন হবে, সেই দিনগুলিতে বন্ধই থাকবে কলকাতা থেকে বিমান চলাচল।
বিভিন্ন উড়ান সংস্থার কর্তাদের দাবি, সপ্তাহের মাঝখানে এক বা দু’দিনের জন্য কলকাতা থেকে উড়ান পরিষেবা থাকলে খুব সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। বছরে দু’বার ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)-এর কাছ থেকে উড়ান-সূচি অনুমোদন করাতে হয় তাঁদের। একটা গ্রীষ্মকালীন সূচি, অন্যটা শীতকালীন সূচি। এখন গ্রীষ্মকালীন সূচি অনুযায়ী উড়ান চলছে।
একটি উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, “এই সূচি তৈরির সময়ে তিনটি বিষয়ে জোর দিতে হয়। এক, একটি বিমানকে সব চেয়ে বেশি কী করে কাজে লাগানো যায়। দুই, পাইলট ও বিমানসেবিকারা যিনি যে শহরে থাকেন, সারা দিন ওড়ার পরে তাঁরা যাতে রাতের মধ্যে সেই শহরে ফিরতে পারেন। তিন, কিছু দিন অন্তর এক-একটি বিমানের রুটিন ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষা থাকে। ফলে, সেই পরীক্ষার দিন রাতে ওই বিমানকে সেই ইঞ্জিনিয়ারিং ঘাঁটিতে ফিরে যেতে হবে।” ওই কর্তার যুক্তি, পাইলট ও বিমানসেবিকাদের রাতে অন্য শহরে নিয়ে ফেললে হোটেলের খরচ বহন করতে হয় উড়ান সংস্থাকেই। তা কমানোর জন্যই এই ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: ভয় উড়িয়ে দল গড়ে জীবাণুমুক্তকরণ শিক্ষকের
এ ছাড়া, একটি বিমান সব সময়ে যে হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় এসে আবার হায়দরাবাদেই ফিরে যাবে, এমনটাও হয় না। যেমন, যে বিমানটি হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় আসছে সূচি অনুযায়ী, কলকাতায় যাত্রীদের নামিয়ে পাইলট হয়তো গুয়াহাটির যাত্রীদের নিয়ে উড়ে যাবেন। আবার আগরতলা থেকে আসা বিমানটি হয়তো কলকাতায় যাত্রীদের নামিয়ে হায়দরাবাদ যাবে। এক কর্তার কথায়, “অনেক অঙ্ক কষে এই সূচি তৈরি হয়।”
এই অবস্থায় দুম করে একটি শহর থেকে সমস্ত উড়ান বন্ধ হয়ে গেলে সেই সূচি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তবে উড়ান সংস্থাগুলির বক্তব্য, দেশ জুড়ে এই মুহূর্তে মাত্র ৩৩ শতাংশ দেশীয় উড়ান চলছে। সেই কারণে প্রতিটি বড় শহরেই অনেক বিমান বসে রয়েছে। তাই একটি শহর থেকে সমস্ত উড়ান বন্ধ হলেও অন্য শহরের সূচি সে ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে না। বসে থাকা অতিরিক্ত বিমানগুলি কাজে লাগানো হচ্ছে।