জেসপের কর্ণধার, ধৃত পবন রুইয়ার বিরুদ্ধে তদন্তে প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা, এবং রেলের বিভিন্ন নথি পুড়িয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে আদালতে চার্জশিটে দিয়ে জানাতে চলেছে সিআইডি।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, রেলের অভিযোগের তদন্ত নেমে তাঁরা ইতিমধ্যেই ওই চার্জশিট তৈরিও করে ফেলেছেন। সিআইডির শীর্ষ কর্তাদের অনুমোদন মিললেই ব্যারাকপুর আদালতে ওই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
সিআইডি সূত্রের খবর, গত ১০ ডিসেম্বর দিল্লির সুন্দরনগরের বাড়ি থেকে পবন রুইয়াকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। সেই থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে দমদম জেলে রয়েছেন তিনি। জেসপ কর্তার জেলবাসের ৯০ দিন পূর্ণ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। তাই ওই দিনের আগেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিতে চাইছেন গোয়েন্দারা। পবন রুইয়ার পাশাপাশি আরও এক জেসপ কর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটে নাম থাকার কথা আছে বলে তদন্তকারীরা জানান। গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, জেসপ কর্ণধারকে জেল হেফাজতে রেখেই ওই মামলার বিচারপর্ব যাতে শেষ করা যায় তার জন্য চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জেসপের দমদম কারখানায় পরপর আগুন লাগার পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই রেলের সঙ্গে ওই বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগটি সামনে আসে। পরে রেলের তরফে সিআইডিকে সঙ্গে নিয়ে ওই কারখানা পরিদর্শনও করা হয়। এর পরেই গত নভেম্বর মাসে রেলের তরফে দমদম থানায় জেসপ কর্তা পবন রুইয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা এবং প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। দমদম থানায় দায়ের করা ওই অভিযোগে রেলের তরফে দাবি করা হয় ২০১২ সালে জেসপকে ৭টি রেক এবং আরও কিছু সরঞ্জাম তৈরির জন্য ৫০ কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়েছিল। তার জন্য কাঁচামালও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চুক্তি মেনে কোনও রেক তৈরি করেনি জেসপ। কাঁচামালেরও হিসেব দেননি।
ওই অভিযোগের তদন্তেই চার্জশিট দিচ্ছেন গোয়েন্দারা।
সিআইডি জানিয়েছে, রেলের ওই অভিযোগ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে আর চারটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দমদমের জেসপ কারখানায় আগুন লাগিয়ে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ওই কারখানাতে পরপর চুরির বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত জেসপ কর্তা। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব গুলির মামলার তদন্তও করছে সিআইডি। ভবানী ভবন সূত্রের দাবি, রেলের অভিযোগের মামলায় চার্জশিট দেওয়ার পরেই ওই সব মামলার তদন্তেরও চার্জশিট দেওয়া হবে।
এক দশক আগে জেসপ এবং ডানলপ কারখানা অধিগ্রহণ করেন পবন রুইয়া। পরে ওই দুটি কারখানায় লক আউট ঘোষণা করেন তিনি। সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাঁরা জেসপের দায়িত্ব অনেকদিন আগেই ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁকে যড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।