—প্রতীকী চিত্র।
নিজে পুলিশকর্মী। তার উপরে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। তাই কোনও অপরাধ করলেও পুলিশ তাকে ছুঁতে পারবে না। এই মনোভাব থেকেই দিনেদুপুরে এক ব্যবসায়ীর মোটরবাইক আটকে ১৭ লক্ষ টাকা ডাকাতি করেছিল রাজ্য পুলিশের ওই কনস্টেবল। আর সেই কাজে সে সঙ্গে নিয়েছিল তারই এক সহকর্মীকে।
ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মী-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করে এমনটাই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। লালবাজার জানিয়েছে, ঘটনার ৫৭ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেওয়া হল। তাতে নাম রয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি-র ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী, কনস্টেবল মহম্মদ শাহজাহান, রাজ্য পুলিশেরই আর এক কনস্টেবল প্রবীণ প্রসাদ এবং শাহজাহানের বন্ধু জাহিদ আনোয়ারের। এদের মধ্যে মূল চক্রী হিসাবে দেখানো হয়েছে জাহিদকে। ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের তরফে শাহজাহান ও প্রবীণকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত ২৭ এপ্রিল পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলে এক ব্যবসায়ীর মোটরবাইক আটকে নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয় শাহজাহান এবং প্রবীণ। এর পরে অভিযোগকারী ও তাঁর সঙ্গীকে বাইকে বসিয়ে ময়দান এলাকার একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় তারা। সেখানে পুলিশের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ব্যবসায়ীর ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তাতেই ১৭ লক্ষ টাকা ছিল। তদন্তে নেমে প্রথমে শাহজাহান এবং প্রবীণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে হাওড়ার বেলিলিয়াস রোড থেকে ধরা হয় জাহিদকে।
লালবাজার জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে গোয়েন্দা বিভাগের ডাকাতি দমন শাখা ২৫ জন সাক্ষীর বয়ান নথিভুক্ত করেছে। চার্জশিটে তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, অভিযোগকারীর সঙ্গে পরিচয় ছিল জাহিদের। তারই সুযোগ নিয়ে সে শাহজাহানের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ওই টাকা লুট করে। আর এই কাজে শাহজাহান সঙ্গে নেয় প্রবীণকে। চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়েছে, ওই ব্যবসায়ী বা তাঁর সঙ্গীরা কে, কখন টাকা নিয়ে বেরোচ্ছেন, কোন কোন রাস্তায় তাঁরা সাধারণত যাতায়াত করেন এবং তাঁদের ছবি— সব তথ্য জাহিদ আগেই পৌঁছে দিয়েছিল শাহজাহানকে।