বিমানবন্দরে টিকিট কাউন্টারের সামনে গিয়ে চেন্নাই উড়ানের টিকিট দিতে বলেছিলেন তিনি। টাকা চান কর্মী। জবাব আসে, ‘‘আমার কাছে টাকা নেই।’’ হতবাক বিমানকর্মী আরও দু’একটি প্রশ্ন করেই বুঝে যান, সমস্যা রয়েছে। ততক্ষণে ভিড় জমে গিয়েছে বছর বত্রিশের ওই যুবতীকে ঘিরে। বেশভুষা সাধারণ। সঙ্গে ব্যাগপত্র কিছু নেই। চেন্নাই যাবেন বলে টালিগঞ্জের বাড়ি থেকে সটান চলে এসেছেন কলকাতা বিমানবন্দরে।
রবিবার সন্ধ্যায় ওই যুবতীকে নিয়ে হইচই শুরু হলে সেখানে পৌঁছন বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-এর অফিসারেরা। যুবতীকে বসিয়ে জেরা করতেই বেরিয়ে পড়ে তাঁর মানসিক অসুস্থতার কথা। খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানার পুলিশ এসে তাঁকে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, পরে ওই যুবতীকে থানায় বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তিনি। গত বেশ কয়েক দিন ধরে নাকি ওষুধও খাননি। এ দিন বাড়ির লোকেরা চোখের আড়াল হতেই একা-একা বেরিয়ে পড়েছিলেন ওই যুবতী। বিকেলে বাসে চেপে পৌঁছন বিমানবন্দরে। সঙ্গে টাকাকড়ি ছিল না। পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘সম্ভবত বাস-ভাড়াও দেননি তিনি।’’
মানসিক সমস্যা থাকলেও যুবতী বেশ সপ্রতিভ বলে জানিয়েছে পুলিশ। কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের দোতলায় ৩সি গেটের ভিতরে ঢুকলে তবেই বিমানসংস্থার কাউন্টারে পৌঁছনো যায়। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসা করে ওই যুবতী ৩সি গেট দিয়ে ঢুকে সোজা চলে যান এয়ার ইন্ডিয়ার কাউন্টারের সামনে। তবে দিল্লি-মুম্বইয়ের বিমান-টিকিট না চেয়ে কেন তিনি চেন্নাই যেতে চাইলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে।
থানায় বাড়ির ঠিকানা ঠিকমতো বলতে না পারলেও যুবতী মোটামুটি ভাবে জানিয়েছিলেন কোথায় থাকেন। সেটুকুর সূত্র ধরে বিমানবন্দর থানার পুলিশ যোগাযোগ করে টালিগঞ্জ থানার সঙ্গে। যুবতীর বলে দেওয়া এলাকায় গিয়ে তাঁর বাড়ি খুঁজে বার করে পুলিশ। ফোনে বিমানবন্দর থানার অফিসারদের সঙ্গে কথা হয় যুবতীর বাবা-মায়ের। তাঁরা মেয়েকে বাড়ি পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন। সন্ধ্যায় মহিলা পুলিশকর্মীর সঙ্গে টালিগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় ওই যুবতীকে।