প্রতীকী ছবি।
ট্র্যাফিক গার্ড থেকে চালান বই সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই অনিয়ম সামনে আসতেই অভিযুক্তকে ট্র্যাফিক গার্ড থেকে সরিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের (দক্ষিণ) অফিসে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে লালবাজার জানিয়েছে।
এই প্রথম নয়, বছরখানেক আগেও ট্র্যাফিক গার্ড থেকে আরও একটি অভিযোগ উঠেছিল। আইনভঙ্গের জরিমানার টাকা সময় মতো ট্র্যাফিক গার্ড থেকে সরকারের ঘরে জমা না পড়ার সেই অভিযোগে এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছিল লালবাজার। এ বার সরাসরি চালান বই (ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে জরিমানার জন্য কাগজের চালান) সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এক পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব থেকে সরানোর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক এসি ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন। তদন্তে তাঁর সুপারিশ মতো ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেছেন লালবাজারের কর্তারা।
ওই সার্জেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? লালবাজার সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক আইনভঙ্গের ব্যবস্থা নিতে এবং জরিমানা আদায় করার জন্য সাধারণ ডায়েরি করে একটি চালান বই দেওয়া হয় প্রতি সার্জেন্টকে। তাতে ২০০টি পাতা থাকে। কী আইন অমান্য করা হয়েছে, তা ওই বইয়ের পাতায় লিখে আইনভঙ্গকারীকে ছিঁড়ে দিতে হয়। জরিমানার প্রমাণ হিসেবে কার্বন কপি রাখা হয়। ২০০ পাতার বইয়ের ১০০ পাতা জরিমানার আয়ে ব্যবহার হয়, বাকি অর্ধেক জমা দেওয়া হয় ট্র্যাফিক গার্ডে।
গত মাসের শেষ দিকে যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ড থেকে তেমনই দু’টি চালান বই উধাও হওয়ার অভিযোগ আসে। যা কোনও অফিসারের নামে দেওয়া হয়নি। ট্র্যাফিক পুলিশের একটি অংশের দাবি, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গার্ডের এক অফিসার বই দু’টি ব্যবহার করে ট্র্যাফিক জরিমানা আদায় করছেন। অবশ্য সেই টাকা তিনি সরকারি কোষাগারে জমা দেননি বলেও অভিযোগ। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই গার্ডের আধিকারিকেরা অভিযুক্তকে জেরা করতেই বিষয়টি সামনে আসে। তাঁরা অভিযুক্তকে ওই চালান বই দু’টি
জমা করতে বললেও তিনি তা করেননি বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, এর পরেই কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় ওই অফিসারের বিরুদ্ধে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ওই দুর্নীতি বন্ধ করতে ‘কাগজবিহীন চালান’-এর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা নিজেদের স্মার্ট ফোনে একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওই জরিমানা করে থাকেন। গাড়িমালিক বা চালকের মোবাইলে এসএমএসে চালান পাঠানো হয়। কাগজের চালানে যা তথ্য থাকে, সবই ওই বার্তায় থাকে। ওই ব্যবস্থাই বাধ্যতামূলক করতে আলোচনা চলছে বলে তিনি জানান।