শহরের হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে মাঝেমধ্যেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অনেক ক্ষেত্রেই ঘটনার তদন্ত করে দেখা যায়, হাসপাতালের ভিতরেই বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামো সংক্রান্ত কোনও অবহেলার কারণে আগুন লেগেছিল। যার অন্যতম কারণ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। সম্প্রতি হুগলির একটি নার্সিংহোমেও একই কারণে আগুন লাগে বলে অভিযোগ ওঠে। ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা যাতে এড়ানো যায়, তার জন্য বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমকে সজাগ হওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে সিইএসসি।
কী লিখেছে সিইএসসি? নার্সিংহোম বা হাসপাতালগুলি তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামো ভাল করে পরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি কোথাও কোনও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন থাকলে দ্রুত তা সারিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সিইএসসি-কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে সেই কাজে সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ারেরা সাহায্যও করতে পারেন।
গত কিছু বছরে কলকাতার কয়েকটি বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটেছে। তার জন্য ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়নি। এ ক্ষেত্রেও তদন্তে দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ বাজারে যত্রতত্র তার টেনে মিটার বক্স থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া হয়েছে। তার দ়ড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ঝুলে রয়েছে। কোনও রক্ষণাবেক্ষণ নেই। ফলে বহু ক্ষেত্রেই সামান্য আগুন ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
সিইএসসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বাজারগুলিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের দিক থেকে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থাই নেওয়া হয়। যে পয়েন্ট থেকে বিদ্যুৎ বাজারগুলিতে যাচ্ছে, সেখানে ‘ব্রেকার’ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে ওভারলোড বা কোনও কারণে আগুন লাগলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বহু জায়গায় বদলে দেওয়া হয়েছে ফিডার বক্স থেকে ট্রান্সফর্মারও। একই ভাবে হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের ক্ষেত্রেও তাঁরা বিভিন্ন ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এখন বাজার ও হাসপাতালগুলি তাদের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর বিষয়টি যদি গুরুত্ব দিয়ে দেখে, তা হলে অনেক ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলেই সংস্থার কর্তারা মনে করছেন।
সিইএসসি সূত্রে খবর, গত ছ’মাসে সিইএসসি বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের ৬২টি পুরনো ট্রান্সফর্মার বদলে দিয়েছে। তেল-সহ ট্রান্সফর্মার (অয়েল টাইপ) বদলে তেলহীন উন্নত ট্রান্সফর্মার (ড্রাই টাইপ) লাগানো হয়েছে। যাতে ট্রান্সফর্মারে আগুন লাগলে দ্রুত তা ছড়িয়ে না পড়ে। বদলে দেওয়া হয়েছে ১১৪টি বিদ্যুৎ স্তম্ভ (বক্স-সহ)। এ ছাড়া, সিইএসসি-র দিক থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে পরিকাঠামোর ব্যবহার হয়, তা-ও পরিবর্তন করা হয়েছে।
চিঠি পেয়ে কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোম কি জবাব দিয়েছে? সিইএসসি জানায়, এখনও লিখিত কোনও উত্তর না দিলেও অনেকেই তাঁদের পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে কোথাও কোনও খামতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।