সল্টলেকে নানা সময়ে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বহিরাগতদের। কখনও আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় কোনও বাড়ির পরিচারক-পরিচারিকা, রাঁধুনি বা কেয়ারটেকারের নামও। এ অবশ্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু এ বার অপরাধের খাতায় নাম লিখিয়েছে বিভিন্ন বাড়ির গ্যারাজে থাকা কেয়ারটেকার বা পরিচারকদের সন্তানেরাও। তাদের মধ্যে এক জন আবার প্রাক্তন এক পুলিশকর্তার বাড়িতে ফাইফরমাশ খাটত। একটি চুরির ঘটনায় কিছু দিন আগে এমনই পাঁচ কিশোরের গ্রেফতারের পরে তাই রীতিমতো চিন্তায় পুলিশ।
সম্প্রতি এফ ডি ব্লকে একটি খাবারের দোকান থেকে খাবার ও টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে এক কিশোরের খোঁজ পায়। তাকে জেরা করতেই সন্ধান মেলে বাকি চার জনের। পুলিশ জেনেছে, এদের প্রত্যেকেই থাকে বিভিন্ন বাড়ির গ্যারাজে।
পুলিশ জানায়, ওই কিশোরদের জেরা করে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, ওই পাঁচ জনই থাকে বিভিন্ন বাড়ির গ্যারাজে। তাদের বাবা কিংবা মা হয় কোনও বাড়ির কেয়ারটেকার অথবা কোথাও পরিচারিকার কাজ করেন। পুলিশ জেনেছে, ওই পাঁচ জন বিভিন্ন দোকান বা বাড়ি থেকে ছিঁচকে চুরি করত। এমনকী, যৌন পল্লিতেও তাদের যাতায়াত ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
সল্টলেকে এ ভাবে বিভিন্ন বাড়ির গ্যারাজে থাকা কেয়ারটেকার, পরিচারক বা রাঁধুনির সন্তানেরা চুরির ঘটনায় ধরা পড়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে পুলিশের। পুলিশ জেনেছে, তাদের মধ্যে এক জন আবার ফাইফরমাশ খাটার কাজ করত এলাকারই বাসিন্দা প্রাক্তন এক পুলিশ কর্তার বাড়িতে। ফলে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও।
কয়েক বছর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেকে অস্থায়ী ভাবে থাকা বহিরাগতদের সম্পর্কে তথ্যভাণ্ডার তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। সে কাজ অবশ্য আজও শেষ হয়নি। বস্তুত বাসিন্দাদের একাংশের অসহযোগিতার কারণেই তা শেষ হচ্ছে না বলে অভিযোগ পুলিশের। এই অবস্থায় এ বার তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করার চিন্তাভাবনা করছে পুলিশ। কারণ এই কিশোরদের সম্পর্কে পূর্বে কোনও অভিযোগ ছিল না। এই চুরির ঘটনায় তারা ধরা না পড়লে পুলিশ টেরই পেত না যে, কিশোরদের একটি দলও নতুন করে অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়েছে।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই ভাবা হবে। এ ক্ষেত্রে বাসিন্দাদের কাছ থেকে ফের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া, সচেতনতা বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।’’