ফের দুর্ঘটনা ‘মা’ উড়ালপুলে। রবিবার বিমানবন্দরমুখী একটি গাড়ি ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে গেলে মৃত্যু হয় এক যুবকের। জখম হন আরও দু’জন। বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উড়ালপুলের নির্মাণগত ত্রুটিকে দায়ী করছেন না। বরং বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মাসুল গুনেই এই দুর্ঘটনা বলে মনে করছেন তাঁরা।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম আমির খান (৩০)। তাঁর বাড়ি একবালপুরে। পুলিশ সূত্রে খবর, উড়ালপুলের পার্ক সার্কাস থেকে বিমানবন্দরমুখী লেন ধরে একটি আই১০ গাড়ি বেপরোয়া গতিতে এগোচ্ছিল। চালকের আসনে ছিলেন আমির। পিছনে ছিলেন সাহিল মুনাল ও সলমন খান নামে আরও দু’জন। আচমকা বাঁকের মুখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। গুরুতর আহত তিন যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে আমিরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। গার্ডেনরিচের বাসিন্দা সাহিল ও সলমনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুত বেগে চলতে থাকা গাড়িটি কুয়াশার মধ্যে বাঁক নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল।
গত ৯ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই উড়ালপুলটি উদ্বোধনের পর থেকেই সেখানে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি বাইক দুর্ঘটনায় এক যুবক মারাও যান। দিন কুড়ি আগেও একটি গাড়ি উল্টে গিয়েছিল এই লেনেই। পুলিশ সূত্রে খবর, পরমা উড়ালপুলের মাঝ বরাবর এবং বাইপাসের এক পাঁচতারা হোটেলের কাছে দু’টি বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। রবিবারের দুর্ঘটনা ঘটেছে হোটেলের কাছের বাঁকটিতেই। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘উড়ালপুলের উপরে গাড়ির গতিবেগ তুলনায় বেশি থাকে। পরমা উড়ালপুলে দু’টি বিপজ্জনক বাঁক ও গাড়ির গতিবেগ বেশি হওয়াতেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে।’’ তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই উড়ালপুলে গাড়ির গতিবেগ ৭০ কিলোমিটারের বেশি হলেই বিপদ ঘটার সম্ভাবনা প্রবল।’’
তবে বারবার দুর্ঘটনা ঘটলেও পরমা উড়ালপুল নির্মাণে প্রযুক্তিগত ক্রুটি আছে বলে মনে করেন না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন প্রধান নীতিন সোম। তাঁর কথায়, ‘‘উড়ালপুলে বাঁক থাকতেই পারে। উড়ালপুল একমুখী হওয়ার পরে যানবাহনের চাপ অনেক কম থাকার সুযোগে গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিচ্ছেন চালকেরা। গতি কমানোর ক্ষেত্রে পুলিশের কিছু বিধিনিষেধ জারি করা জরুরি।’’ ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমান নেশাকুমার বলেন, ‘‘উড়ালপুলে গাড়ি চালানোর সময়ে চালকদের আমরা সতর্ক হতে বলছি। বাঁকের মুখে জোরে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনা তো হবেই।’’