—প্রতীকী ছবি।
শৌচাগার-দুর্নীতি কাণ্ডে চার্জ গঠন প্রক্রিয়ায় ‘অভিযুক্ত’ হিসাবে শিক্ষকদের নাম বাদ দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭-’২০ সালের মধ্যে পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শৌচাগার সংস্কারের নামে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকার গরমিল ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় আগেই শিক্ষা দফতরের চার প্রাক্তন আধিকারিক ও কর্মীকে শো-কজ় করেছিল পুরসভা। জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তদানীন্তন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছিলেন, খরচের বিলে তাঁদের জোর করে সই করিয়ে ঠিকাদারদের টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। শিক্ষকদের ওই তত্ত্বে পুর আধিকারিকদের একাংশ খুশি ছিলেন না। তাই ঠিক হয়েছিল, চার্জ গঠনের প্রক্রিয়ায় ‘অভিযুক্ত’ চার প্রাক্তন আধিকারিক ও কর্মীর পাশাপাশি ৫০টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও নাম থাকবে। পুরসভা সূত্রের খবর, শিক্ষকদের নাম জুড়ে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে খুশি হননি সদ্য বদলি হওয়া কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার। সম্প্রতি শিক্ষা ও পার্সোনেল দফতরের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে বিদায়ী পুর কমিশনার আধিকারিকদের বলেন, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগ শিক্ষকেরাই প্রকাশ্যে এনেছিলেন। তাই তাঁদের নাম ‘সাক্ষী’র তালিকায় রাখা হোক।’’ সেই মতো শিক্ষকদের নাম চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া থেকে বাদ দিয়ে শুনানি শুরু করতে চায় পুরসভা।
উল্লেখ্য, শুনানি প্রায় তিন মাস চলবে। শো-কজ়ের তালিকায় থাকা প্রাক্তন চার পুর আধিকারিক ও কর্মী আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন। তবে, অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন পুর কর্তৃপক্ষ। শুনানির সময়ে পুরসভা নিযুক্ত এক তদন্তকারী আধিকারিক বিচারকের ভূমিকায় থাকবেন। ওই সময়ে শিক্ষকদের দফায় দফায় ‘সাক্ষী’ হিসাবে ডাকা হবে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছিলেন, ২০১৭-’২০ সালের মধ্যে তাঁদের ভয় দেখিয়ে রসিদে সই করানো হয়েছিল। শিক্ষকদের বয়ান তাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাক্তন চার আধিকারিককে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’
বছর ছয়েক আগেই এই দুর্নীতির প্রতিবাদে পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন বাম প্রভাবিত ‘কলকাতা পৌর শিক্ষক ও কর্মী সঙ্ঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক অশোককুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা শুনানিতে যা বলার বলবেন। বিদ্যালয় সংস্কার না করে মোটা টাকা চুরি হয়েছে। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’