প্রতীকী ছবি।
রোগীর পরিবারের দাবি, শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ চিকিৎসক বলেছিলেন, “রোগী ভাল আছেন। খাওয়াদাওয়া করছেন। শয্যায় বসে গল্প করছেন।” আবার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার মিনিট দশেকের মধ্যেই রোগীর ছেলের মোবাইলে হাসপাতালের ওয়ার্ড অফিস থেকে ফোন করে খবর দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবারই রোগী মারা গিয়েছেন।
কিন্তু চিকিৎসক যে বলছেন, রোগী ভাল আছেন!
অভিযোগ, রোগীর পরিবারের পাল্টা চাপের মুখে পড়ে এর পরে হাসপাতাল জানায় রোগী শয্যায় নেই। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবারও রোগীর পরিবারকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার বাসিন্দা ওই রোগিণীর মৃত্যু হয়েছে বলেই জানতে পারেন তাঁর পরিজনেরা। ঘটনার পরে হাসপাতালের সুপারের কাছে এবং বৌবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার ছেলে। এর আগেও উত্তর কলকাতার গোয়াবাগানের বাসিন্দা এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় কোভিড হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই। কিন্তু তাঁর পরিবারের অভিযোগ ছিল, হাসপাতাল তাঁদের প্রথমে জানিয়েছিল রোগী পালিয়েছেন। রোগীর খোঁজে তাঁর বাড়িতে চলে যায় বড়তলা থানার পুলিশও।
মৃতার বড় জামাই শুক্রবার জানান, তাঁর শাশুড়ি কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় তাঁকে হাড়োয়ার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ভর্তির করার পরে দু’বেলা রোগিণীর জন্য খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন পরিজনেরা। মৃতার জামাই বলেন, ‘‘এ দিনও খাবার নিয়ে যাওয়ার সময়ে হাসপাতালের কর্মীরা বলেছেন শাশুড়ি ভাল আছেন। তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুর খবর আসে কী করে?’’
মৃতার ছেলে বলেন, “এ দিন দুপুর ১টায় চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। মা গ্রিন বিল্ডিংয়ের ১০১ নম্বর শয্যায় ছিলেন। চিকিৎসক জানান মা খুব ভাল আছেন। শয্যায় বসে গল্প করছেন। তার কয়েক মিনিট পরেই ফোনে আমাকে বলা হল বৃহস্পতিবার বিকেলেই মা মারা গিয়েছেন!” তাঁর দাবি, মায়ের শয্যার কাছে গিয়ে তিনি দেখেন, শয্যা ফাঁকা। পরে ওই চিকিৎসকই জানান তাঁর মাকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। তা হলে চিকিৎসক কাকে গল্প করতে দেখেছিলেন, সে প্রশ্নও তুলছে মৃতার পরিবার।
মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস এ দিন বলেন, “আমি দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। মহিলা যে মারা গিয়েছেন তা তাঁর পরিবারের লোকদের জানাতে দেরি হল কেন, তা জানতে চেয়েছি। ওই পরিবারের কাছে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। কারওর সঙ্গেই এ রকম হওয়ার কথা নয়।”
মায়ের মরদেহ দেখে ফিরে যাওয়ার সময়ে ছেলে অবশ্য বললেন, “ক্ষমা চেয়ে কী হবে! কোয়রান্টিনে থাকার পরে বিচার চাইতে ফের থানায় যাব।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)