থানায় হাজির হওয়া যুবকের মুখে স্ত্রী নিখোঁজের খবর শুনে সন্দেহ হয়েছিল পুলিশের। ঘটনার সত্যতা জানতে ওই যুবককে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যাওয়ার পরে তিনি জানান, তালাবন্ধ ঘরের চাবি খোয়া গিয়েছে। সোমবার দুপুরে কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লিতে ওই যুবকের ঘরের তালা ভেঙে বাগুইআটি থানার পুলিশ দেখল, পড়ে রয়েছে ‘নিখোঁজ’ স্ত্রীর মৃতদেহ!
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম বেবি পোদ্দার ঘোষ (৩০)। আপাত ভাবে তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তবে দেহে পচন ধরে গিয়েছিল। মৃতদেহটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে বেবির স্বামী রনি সাহাকে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় রনি স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, পেশায় ক্যাবচালক রনি এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ বাগুইআটি থানায় হাজির হয়ে জানায়, শনিবার রাতে স্ত্রী বেবির সঙ্গে তার গোলমাল হয়েছিল। সে তাঁকে মারধরও করে। এর পরে বাড়ি ছেড়ে চলে যান বেবি। কিন্তু যে ভাবে রনি কথা বলছিল, তাতে সন্দেহ হয় পুলিশ অফিসারদের। তাঁরা রনিকে নিয়ে তার বাড়িতে হাজির হন। সেখানে গিয়ে তালাবন্ধ ঘর পুলিশ খুলতে বলার পরেই রনি জানায়, চাবি হারিয়ে গিয়েছে। এর পরে দরজা ভেঙে পুলিশ ঢুকতেই বেবির দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দেহ উদ্ধারের অন্তত ৩৬ ঘণ্টা আগেই মারা গিয়েছেন ওই তরুণী। তার পরেই রনিকে থানায় নিয়ে এসে জেরা শুরু হয়।
সূত্রের খবর, রবীন্দ্রপল্লির ওই বাড়িতে ভাড়া থাকে রনি। তাকে জেরা করে পুলিশ আরও জেনেছে, শনিবার রাতে মারধর করার সময়ে বেবির গলা টিপে ধরে সে। বেবি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তা দেখে রনি বাড়ি থেকে পালায়। রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরে সোমবার ফিরে এসেছিল সে। ঘর থেকে গন্ধ বেরোতে দেখেই থানায় গিয়ে স্ত্রীর নিখোঁজের গল্প ফেঁদেছিল।
বাড়িওয়ালা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২৬ জানুয়ারি রনি ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। মাস দেড়েক আগে বেবিকে নিয়ে আসে সে। দু’জনের কেউই পাড়ায় মিশতেন না। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, রনি ও বেবি, দু’জনেরই আগে এক বার বিয়ে হয়েছিল।
সম্প্রতি বেবির প্রাক্তন স্বামী রনিকে বেবির কিছু ছবি পাঠান। তা থেকেই দু’জনের গোলমাল শুরু। সেই গোলমাল থেকেই শনিবার রনি মারধর করেছিল স্ত্রীকে। বেবির বাবা-মা সম্পর্কেও রনি রাত পর্যন্ত মুখ খুলতে চায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে রনিকে আরও জেরা করা হবে।