মৌসুমি সরকার।
মেয়ে অসুস্থ বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন গিয়েছিল পরিজনেদের কাছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তাঁরা এসে দেখেন, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছে মেয়ের নিথর দেহ। বুধবার সকালে সোনারপুর থানার লাঙ্গনবেড়িয়ার ওই গৃহবধূর মৃত্যুতে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম মৌসুমি সরকার (৩২)। বৃহস্পতিবার মৃতদেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, যাদবপুরের আদর্শনগরের মৌসুমির সঙ্গে বছর চারেক আগে বিয়ে হয়েছিল লাঙ্গনবেড়িয়ার বাসিন্দা স্বপন সরকারের। মৌসুমির পরিজনেদের অভিযোগ, গায়ে আগুন লাগিয়ে তাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মৌসুমির কাকা সুদীপ পাল বলেন, ‘‘আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। পণের দাবিতেই খুন করা হয়েছে বলে আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই গৃহবধূর স্বামী স্বপন সরকার এবং শ্বশুর কমল সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, গত ১০ নভেম্বর শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হন মৌসুমি। কিন্তু তার পরে গত এক মাস ধরে তাঁকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন স্বপন ও কমল। এমনকি সেই খবর মৌসুমির পরিজনদের জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ। বুধবার সকালে মৌসুমি অসুস্থ বলে তাঁর বাড়িতে ফোনে জানায় স্বপন। এর পরেই লাঙ্গনবেড়িয়ার বাড়িতে এসে মৌসুমির অগ্নিদগ্ধ দেহ দেখতে পান তাঁর পরিজনেরা। তখন সোনারপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তবে পুলিশি জেরায় স্বপন ও কমল দাবি করেছে, গত ১০ নভেম্বর রান্না করতে গিয়ে স্টোভের আগুনে পুড়ে গিয়েছিলেন মৌসুমি। সেই খবর তাঁর পরিজনেদের জানানো হয়েছিল বলে দাবি ধৃতদের। স্থানীয় এক চিকিৎসক মৌসুমির চিকিৎসা করছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ওই চিকিৎসকের খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা। আপাতদৃষ্টিতে ওই গৃহবধূর দেহের প্রায় ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে রেখে কেন চিকিৎসা করা হচ্ছিল, সেই প্রশ্ন উঠছে।