মাটির নীচে সফরের সময়ে যেন ফোন না আসে, এমনটা ভেবেই মেট্রোয় ওঠেন বিএসএনএল-এর গ্রাহকেরা। কারণ স্টেশনে যদিও বা কথা বলা যায়, ট্রেন সুড়ঙ্গে ঢুকলেই ফোন কেটে যায়। মেট্রো সফরে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন বিএসএনএল-এর গ্রাহকেরা। মাসখানেকের মধ্যেই মেট্রোয় নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল পরিষেবা চালু করবে বিএসএনএল।পাশাপাশি শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল জায়গা এবং ভবনে ওয়াইফাই পরিষেবা দিতে ‘হটস্পট’ও গড়বে তারা। সেই পরিষেবাও মে মাসের শেষের দিকে চালু করতে উদ্যোগী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।
কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় টেলিকম পরিষেবার দায়িত্ব বিএসএনএল-এর শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর। ক্যালকাটা টেলিফোন্স-এর চিফ জেনারেল ম্যানেজার এস পি ত্রিপাঠী মঙ্গলবার জানান, সুড়ঙ্গের মধ্যেও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পরিষেবা দেওয়ার জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্বে। মে মাসের শেষের দিকেই তা চালু হয়ে যাবে।
বস্তুত মেট্রো ও সংলগ্ন এলাকায় মোবাইলে পরিষেবা উন্নত করতে তৎপর ক্যালকাটা টেলিফোন্স। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই সেই দৌড়ে এতটাই এগিয়ে যে গ্রাহক ধরে রাখতে তাই মেট্রো সফরে পরিষেবা ঢেলে সাজা ছাড়া উপায় নেই তাদের।
ক্যালকাটা টেলিফোন্স সূত্রে জানা গিয়েছে, মেট্রোর সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে রেলের নিজস্ব কেব্ল রয়েছে। সুড়ঙ্গের মধ্যে পরিষেবা দিতে সেই কেব্লই মেট্রোর কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছে তারা। সুড়ঙ্গের মধ্যেও ৩জি পরিষেবা মিলবে বলে দাবি সংস্থাটির।
মেট্রো স্টেশন ও সংলগ্ন এলাকাতেও বিএসএনএল-এর পরিষেবা নিয়ে গ্রাহক মহলে ক্ষোভ রয়েছে। সংস্থা সূত্রের খবর, এখন টেলিফোন এক্সচেঞ্জ থেকে
মেট্রো স্টেশনগুলি পর্যন্ত তামার কেব্ল রয়েছে। পরিষেবার মান বাড়াতে সেগুলি বদলে ‘অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল’ (ওএফসি) বসানো হচ্ছে।
পাশাপাশি, গ্রাহক টানতে বিএসএনএল-এর নজর ওয়াই-ফাই পরিষেবার দিকেও। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফোনে ইন্টারনেটের চাহিদা যে হারে বাড়ছে, তা উপেক্ষা করে থাকতে পারছে না তারাও।
শপিং মল-সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ওয়াইফাই পরিষেবা দিতে ‘হটস্পট’ তৈরি করে বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলি। কলকাতা বিমানবন্দরে এক সময়ে তা চালু করেও পরে তা আর চালাতে পারেনি বিএসএনএল। শহরের
অন্তত ২০০টি এমন ‘হটস্পট’ চালুর কথা আগে জানিয়েছিল তারা।
এ দিন এস পি ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আমরা ৮০-৯০টি এমন জায়গা চিহ্নিত করেছি। মে মাসের শেষের দিকে ৪.৫জি মানের ওয়াইফাই পরিষেবা চালু হবে।’’ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, টেলিফোন ভবনে তার মূল পরিকাঠামো তৈরি। শীঘ্রই পরীক্ষার কাজ শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সব মিলিয়ে ৪৫০০টিরও বেশি হটস্পট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।