প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট অচল থাকায় ব্যাহত হচ্ছে নিবন্ধন প্রক্রিয়া। বিয়ের শংসাপত্র না পেয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন পাত্রপাত্রী ও তাঁদের পরিবার। সমস্যার সমাধানে ১ নভেম্বর আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসে রাজ্যের বিবাহ আধিকারিকদের (ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসার্স) সংগঠন। কলকাতা ও শহরতলির ম্যারেজ অফিসারেরা জানাচ্ছেন, সেপ্টেম্বর থেকে ওয়েবসাইটের সার্ভারের সমস্যা চলছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সার্ভার সম্পূর্ণ অচল।
কুমোরটুলির বাসিন্দা সঙ্গীতা পালের অভিযোগ, ‘‘২০ নভেম্বর রেজিস্ট্রি হলেও সার্টিফিকেট পাইনি। সামনের মাসে বেড়াতে যাওয়ার কথা। সার্টিফিকেট না পেলে সেটা নিশ্চিত করতে পারছি না।’’ সঙ্গীতার দাবি, ‘‘নিয়ম মেনেই রেজিস্ট্রির আবেদন করেছিলাম। মোবাইলে মেসেজও এসেছিল।’’ শোভাবাজারের অনিন্দিতা সাহার বিয়ে আজ, শনিবার। অনিন্দিতার বক্তব্য, ‘‘অক্টোবরে রেজিস্ট্রির আবেদন করেছিলাম। শুক্রবার ম্যারেজ অফিসার জানালেন, পোর্টালের গোলমালের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না। একাধিক আইনজীবী ও ম্যারেজ অফিসারের শরণাপন্ন হয়ে আপাতত খাতায়-কলমে বিয়ের রেজিস্ট্রি হবে। অনলাইনে কবে হবে, চিন্তায় আছি।’’
সারা রাজ্যে প্রায় দু’হাজার ম্যারেজ অফিসার রয়েছেন। বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করানোর জন্য পাত্রপাত্রীরা তাঁদের দ্বারস্থ হন। ২০১৯ সাল থেকে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া অনলাইনে হচ্ছে। নিয়ম মতো পাত্রপাত্রী, তাঁদের দু’পক্ষের তিন জন সাক্ষী এবং বিবাহ আধিকারিক মিলিয়ে মোট ছ’জনের ছবি-সহ বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হয়। কিন্তু সার্ভারের সমস্যায় সেই রেজিস্ট্রেশনই হচ্ছে না।
ওয়েবসাইটের সমস্যার কথা জানিয়ে রাজ্যের রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ম্যারেজকে চিঠি লিখেছেন কুমোরটুলির ম্যারেজ অফিসার ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বিয়ের সামাজিক অনুষ্ঠানের থেকেও রেজিস্ট্রেশন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পোর্টালের সমস্যায় বিয়ের সার্টিফিকেট না পেয়ে অনেকের বিদেশে যাওয়া আটকে রয়েছে।’’ সল্টলেকের ম্যারেজ রেজিস্ট্রার স্বপ্না গুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের কাছে নানা রকম হুমকি আসছে। সরকার গুরুত্ব সহকারে বিষয়টা দেখুক।’’
‘প্রোগ্রেসিভ ম্যারেজ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বনশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন পোর্টাল কাজ না করায় রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। বিয়ে করেও সার্টিফিকেট মিলছে না। অনেকে বিয়ের তারিখ পিছোচ্ছেন। রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ম্যারেজ-এর অফিসে বার বার বলেও কাজ হচ্ছে না।’’
রাজ্যের রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ম্যারেজ দীপ্তার্ক বসু সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা রয়েছে। ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার (এনআইসি) বিষয়টি দেখছে।’’ রাজ্যের আইন দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘ওয়েবসাইটের সার্ভারের সমস্যায় বিয়ের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’