ক্ষতিপূরণের জন্য মঙ্গলবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের উপরে রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। —ফাইল চিত্র।
বৌবাজার বিপর্যয়ে আপৎকালীন ক্ষতিপূরণের জন্য মঙ্গলবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের উপরে রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। ঠিক তার পরের দিনেই ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এই বার্তা রাজ্য সরকারকে জানিয়েও দিয়েছে তারা। আজ, বৃহস্পতিবার বৌবাজার পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠকে নিরাপত্তা-সমীক্ষার পক্ষে ফের সওয়াল করতে পারে রাজ্য।
মঙ্গলবারেই নবান্নের বৈঠকে মেট্রো প্রকল্পের কাজের জেরে বৌবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে আপৎকালীন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে জোরালো সওয়াল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, আপাতত ক্ষতিগ্রস্তদের পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মানস সরকার বৈঠকে জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইতিবাচক সেই সিদ্ধান্তের কথাই রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে।
আপৎকালীন ক্ষতিপূরণের ‘জট’ কাটলেও বৌবাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ কাটেনি রাজ্য সরকারের। নতুন করে কিছু বাড়িতে সমস্যা দেখা দেওয়ায় বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বৌবাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সকলেই। বৌবাজারে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। সেই কমিটিতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা ছাড়াও রয়েছেন মেট্রো রেলের প্রতিনিধি। আজ, বৃহস্পতিবার কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। প্রশাসনের অন্দরের খবর, বৌবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতেও সুরক্ষা-সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। কারণ, যে-ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সুরক্ষা-সমীক্ষার পরিধি বাড়াতে চাইছে রাজ্য। এক সরকারি কর্তার কথায়, ‘‘প্রকল্প সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও আশেপাশে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।’’
এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বৌবাজার-কাণ্ডের রিপোর্ট দেন ডিসি (সেন্ট্রাল) নীলকান্ত সুধীর কুমার। আরও ২০টি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। বৌবাজারে যে-সব বাড়ি আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে, সেগুলি থেকে
বাসিন্দা এবং জিনিসপত্র কী ভাবে বার করা যায়, তা দেখার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আরও সতর্ক হওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে ব্যারিকেড দেওয়ার এবং মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।