এই ট্রামেই রয়েছে ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার। নিজস্ব চিত্র
বইপাড়া দিয়ে ট্রামের যাতায়াত বহু দিনের। কিন্তু এ বার ওই পথে ট্রামে বসেই বই দেখার এবং পড়ার সুযোগ পাবেন যাত্রীরা। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে এসপ্লানেড-শ্যামবাজার রুটের একটি ট্রামে ‘বুকস অন হুইলস’ বা চলমান গ্রন্থাগার পরিষেবা শুরু করছে রাজ্য পরিবহণ নিগম। এক কামরার ওই ট্রামে থাকছে ওয়াইফাই-এর সুবিধাও। যাত্রীরা সেখানে ইচ্ছেমতো বই এবং বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ঘেঁটে দেখার সুযোগ পাবেন। প্রথম সপ্তাহে ওই ট্রামে উঠলে উপহার হিসেবে মিলবে একটি কলমও।
রাজ্য পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, আমপানের ধাক্কা কাটিয়ে এ দিন থেকেই যাত্রী-পরিষেবা শুরু হচ্ছে এসপ্লানেড-শ্যামবাজার রুটে। এর আগে বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ, রাজাবাজার-হাওড়া সেতু, গড়িয়াহাট-এসপ্লানেড এবং শ্যামবাজার-হাওড়া সেতুর মতো একাধিক রুটে পরিষেবা শুরু হয়েছে।
রাজ্য পরিবহণ নিগম সূত্রের খবর, গ্রন্থাগার হিসেবে সেজে ওঠা ট্রামটি এসপ্লানেড থেকে লেনিন সরণি, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট হয়ে বৌবাজার ছুঁয়ে কলেজ স্ট্রিট যাবে। সেখান থেকে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, বিবেকানন্দ রোড, হেদুয়া, হাতিবাগান হয়ে শ্যামবাজার টার্মিনাসে পৌঁছবে। ফিরতি পথে একই রুটে আসবে এসপ্লানেডে।
বইপাড়া ছুঁয়ে যাওয়া ওই ট্রামের রুটে হাতিবাগানের টাউন স্কুল থেকে স্কটিশ চার্চ কলেজ, বেথুন স্কুল, বিদ্যাসাগর কলেজ, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ-সহ প্রায় ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সমসাময়িক বিষয়ের পত্রপত্রিকাও থাকছে ওই চলমান গ্রন্থাগারে। এ ছাড়াও থাকছে অনেক বই। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগকে জনপ্রিয় করে তুলতে ওই ট্রামে বিভিন্ন বই এবং পত্রপত্রিকার প্রকাশ অনুষ্ঠান করারও ভাবনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। এ ছাড়া, ওই ট্রামে সাহিত্যসভার আয়োজন করারও ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবহণ নিগমের এক আধিকারিক বললেন, ‘‘পড়ুয়াদের ট্রামযাত্রায় উৎসাহী করে তোলার পাশাপাশি বইপাড়ার সঙ্গে ট্রামের যোগাযোগের দিকটি তুলে ধরাও এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য।’’ ইতিমধ্যেই রাজ্য পরিবহণ নিগমের উদ্যোগে চলন্ত ট্রামে রেস্তরাঁ যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে। এ বার বইপাড়া দিয়ে যাতায়াতের পথে বই পড়ার সুযোগ যাত্রীরা হাতছাড়া করবেন না বলেই আশা করছেন ট্রাম কোম্পানির কর্তারা।