body

Body recovered: বন্ধুর তালাবন্ধ ঘরে দেহ উদ্ধার রিকশাচালকের, সন্দেহ খুন

তালাবন্ধ ঘর থেকে বুধবার রাতেই পাওয়া যাচ্ছিল পচা গন্ধ। বৃহস্পতিবার সকালে সেই দুর্গন্ধে টিকতে পারছিলেন না প্রতিবেশীরা। তাঁরা খবর দেন থানায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৬:৫৭
Share:

তদন্ত: শম্ভু অধিকারীর (ইনসেটে) দেহ উদ্ধারের পরে এলাকায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার, বাঘা যতীনে। নিজস্ব চিত্র

তালাবন্ধ ঘর থেকে বুধবার রাতেই পাওয়া যাচ্ছিল পচা গন্ধ। বৃহস্পতিবার সকালে সেই দুর্গন্ধে টিকতে পারছিলেন না প্রতিবেশীরা। তাঁরা খবর দেন থানায়। পুলিশ এসে তালা ভেঙে এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। তাঁর নাম শম্ভু অধিকারী (৪৫)। পেশায় রিকশাচালক। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার বাঘা যতীনের তালপুকুর রোডে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, শম্ভুকে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তালপুকুর রোডে যে ঘর থেকে শম্ভুর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে ভাড়া থাকেন গোপাল হালদার নামে আর এক রিকশাচালক। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গোপালই শম্ভুকে খুন করে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়েছেন। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তবে ঠিক কী কারণে শম্ভু খুন হলেন, তা নিয়ে তদন্তকারীরাও অন্ধকারে।

এ দিন সকালে তালা ভাঙার পরে দরজা খুলে পুলিশ দেখে, ঘরের এক কোণে শম্ভুর পচাগলা দেহ পড়ে রয়েছে। মাথা ও গলার পাশে রক্তের দাগ। পরে শম্ভুর স্ত্রী এসে তাঁর স্বামীর দেহ শনাক্ত করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে মাথায় ও গলায় আঘাত করে শম্ভুকে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শম্ভু এবং গোপাল পরস্পরের দীর্ঘদিনের বন্ধু। পাড়ার স্ট্যান্ডের রিকশাচালকেরা জানান, তাঁরা দু’জন অধিকাংশ সময়ে একসঙ্গেই থাকতেন। রাতে দু’জনে মিলে নিয়মিত নেশাও করতেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শম্ভু গড়িয়ায় স্ত্রীর সঙ্গে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গোপাল তাঁর মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন তালপুকুর রোডের ওই বাড়িতে। এলাকার লোকজন জানান, শম্ভু তাঁর স্ত্রীকে না জানিয়েই সোমবার গোপালের বাড়িতে আসেন। স্থানীয় রিকশা সংগঠনের নেতা গোপাল বৈদ্য বললেন, ‘‘শম্ভু নিয়মিত গোপালের কাছে আসতেন। সোমবার রাতে ওঁর স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানান, বাড়িতে না জানিয়েই শম্ভু বেরিয়ে গিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে গোপালের ভাড়া বাড়িতে গিয়ে দেখি, দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ।’’

এ দিন শম্ভুর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর মা-সহ পরিবারের সকলে বাঘা যতীনে এসে পৌঁছন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে শম্ভু ছিলেন সবার বড়। তাঁর তিন মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শম্ভুর বড় বোন প্রতিমা অধিকারী দাস বলেন, ‘‘দাদা সম্প্রতি একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছিল। ও খুন হওয়ার পর থেকে ৬০ হাজার টাকা দামের সেই নতুন রিকশাটাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি, দাদার মোবাইলটাও উধাও। আমাদের মনে হয়, ওই নতুন রিকশাটা চুরি করতেই দাদাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দাদার খুনির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক, এটাই চাই।’’ মৃতের পরিবারের সদস্যেরা জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে শম্ভুকে মোবাইলে পাওয়া যায়নি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। তবে তিন দিন নিখোঁজ থাকা সত্ত্বেও শম্ভুর পরিবার কেন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেনি, সে উত্তর মেলেনি।

স্থানীয় রিকশাচালকদের প্রায় সকলেই শম্ভু ও গোপালকে পরস্পরের বন্ধু বলে জানতেন। এক রিকশাচালকের কথায়, ‘‘ওরা দু’জন বাঘা যতীন স্টেশন রোডে রিকশা চালাত। রিকশা চালানোর সময়টুকু ছাড়া ওরা একসঙ্গেই থাকত। দু’জনেই নিয়মিত নেশা করত।’’ এত ঘনিষ্ঠ কোনও বন্ধু কেন শম্ভুকে খুন করবেন, সেটাই বুঝে উঠতেপারছেন না তদন্তকারীরা। সোমবার সন্ধ্যায় শম্ভু গোপালের বাড়িতে এসেছিলেন। সম্ভবত সেই রাতেই খুন করা হয় তাঁকে। মৃতদেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই খুনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে পুলিশের ধারণা। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, তদন্ত চলছে। অভিযুক্তের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement