হাওড়া ও বালি ব্রিজ। —ফাইল চিত্র।
বিধানসভায় বুধবার পাশ হল ‘দ্য হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল, ২০২১’। এর ফলে হাওড়া পুরসভার ওয়ার্ডের সংখ্যা ৬৬ থেকে কমে ফের ৫০ হয়ে গেল। বালিকে হাওড়া থেকে আলাদা করে দেওয়ার পরে হাওড়া পুরসভার যে অংশ পড়ে রইল, তার পুনর্বিন্যাস করেই ৫০টি ওয়ার্ড হয়েছে।
হাওড়া পুরসভায় আগে ৫০টি ওয়ার্ডই ছিল। ২০১৫ সালে ৩৫টি ওয়ার্ডের বালি পুরসভাকে ১৬টি ওয়ার্ডে পরিণত করে হাওড়ার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। তখন হাওড়ার ওয়ার্ডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬টি।
বিধানসভায় এ দিন ওই বিল সংক্রান্ত আলোচনায় বিরোধী বিজেপির বিধায়কেরা বালি এবং হাওড়ার উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের বক্তব্য, এই পরিবর্তন কেন করা হচ্ছে, তাঁরা বুঝতে পারছেন না। বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই পরিবর্তনের আগে বালির মানুষের মত নেওয়া হয়েছে কি? বালিকে হাওড়ার অন্তর্ভুক্ত করাই বা হল কেন আর এখন বাদই বা দেওয়া হল কেন?” বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, শঙ্কর ঘোষ, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এ দিন অভিযোগ করেন, তৃণমূল জমানায় পুর পরিষেবা থেকে নাগরিকেরা বঞ্চিত। শঙ্কর বলেন, “পুরসভা, পঞ্চায়েতের মতো আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসিত সরকারগুলির প্রতি তৃণমূল সরকার চূড়ান্ত অশ্রদ্ধা দেখায়। জনগণের মতামত নিয়ে পুরসভা চালানোর চেয়ে প্রশাসকমণ্ডলী দিয়ে পুরবোর্ড চালাতে তারা বেশি স্বচ্ছন্দ। দীর্ঘ দিন ধরে নির্বাচন বকেয়া থাকায় পুরসভা সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে ব্যর্থ। তা ছাড়া বিরোধীদের জেতা পুরবোর্ডগুলিকে দখল করার মধ্যে দিয়ে শাসকের অগণতান্ত্রিক মনোভাবই স্পষ্ট।”
জবাবি ভাষণে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁদের বিঁধে বলেন, “যাঁরা উৎসব থাকায় বিধানসভা অধিবেশনে আসেননি, তাঁদের পক্ষে জানা সম্ভব নয় কেন বালি এবং হাওড়াকে আলাদা করা হয়েছে। তাঁরা বিধানসভা ভবনে এসেছেন, সই করেছেন, কিন্তু অধিবেশনে ঢোকেননি। কেন সই করেছেন, তার বিশদ ব্যাখ্যায় আর যাচ্ছি না।” শঙ্করের বক্তব্যের জবাবে চন্দ্রিমা বলেন, “আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসিত সরকারকে প্রাধান্য দিয়ে আধুনিকীকরণ করার কাজ আমাদের সরকারই করেছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি উন্নয়নের জন্য অনেক বেশি টাকা পেয়েছে। আমরা পাইনি। তা সত্ত্বেও আমরা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার, মা ক্যান্টিন ইত্যাদি চালাই। আমাদের সরকারের মতো মানবিক মুখ আর কোনও সরকারের নেই।”