সেতুর গর্তে স্কুটার উল্টে জখম যুবক

পুলিশ সূত্রের খবর, অঙ্কিতের বাড়ি যাদবপুরে। তিনি ছোট মালবাহী গাড়ি চালান। স্ত্রী রূপা ও বছর চারেকের একটি ছেলে রয়েছে তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৬
Share:

ঘটনাস্থল: ঢাকুরিয়া সেতুর এই গর্তে পড়েই উল্টে যায় অঙ্কিত সাউয়ের স্কুটার। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

গত শনিবারই গড়িয়ার সন্ধ্যাবাজার এলাকায় গর্তে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। এ বার ঢাকুরিয়া সেতুর গর্তে স্কুটারের চাকা পড়ায় গুরুতর জখম হলেন এক যুবক। অঙ্কিত সাউ নামে বছর আঠাশের ওই যুবককে এলাকারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর মাথায় থাকা হেলমেটটিও রাস্তায় ধাক্কা খেয়ে দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। আহতের পরিবারের অভিযোগ, ঢাকুরিয়ার ওই হাসপাতাল প্রথমে জানিয়েছিল, টাকা না পেলে তারা চিকিৎসা শুরু করবে না।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, অঙ্কিতের বাড়ি যাদবপুরে। তিনি ছোট মালবাহী গাড়ি চালান। স্ত্রী রূপা ও বছর চারেকের একটি ছেলে রয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার রাতে শ্বশুরবাড়ির পাড়ায় বিশ্বকর্মার মূর্তি আনার কথা ছিল। সেই কাজে যোগ দিতেই রাত ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অঙ্কিত। মাঝপথেই ঘটে দুর্ঘটনা। রবীন্দ্র সরোবর থানার তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘অঙ্কিতের স্কুটারটি দ্রুত গতিতে আসছিল। সেতুর উপরের গর্তে পড়ে সেটি উল্টে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা অঙ্কিতকে নিজের গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। আমরা গিয়ে দেখি, মাথার হেলমেটটাও ভেঙে গিয়েছে।’’

অঙ্কিতের স্ত্রী রূপা মণ্ডল বলেন, ‘‘রাত ১২টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে আমাদের চলে আসতে বলা হয়। গিয়ে দেখি, অত গুরুতর ভাবে জখম হওয়া সত্ত্বেও ওর চিকিৎসা শুরু হয়নি। টাকা না পেলে চিকিৎসা হবে না বলে দেওয়া হয়। জানানো হয়, প্রতিদিনের চিকিৎসার জন্য ৭০ হাজার টাকা করে লাগবে।’’ এর পরেই আহতের প্রতিবেশীরা হাসপাতালে চড়াও হন। রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের দাবি, তারাই ঢাকুরিয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বোঝায় যে, আইন অনুযায়ী যে কোনও পথ দুর্ঘটনায় আহতকে সব চেয়ে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই নিয়ম। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল সেই আহতকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বাধ্য। এর পরেই অঙ্কিতকে ভর্তি নেয় আমরি হাসপাতাল। এখন তিনি সেখানকার ‘ইন্টেনসিভ থেরাপি ইউনিট’ (আইটিইউ)-এ চিকিৎসাধীন। ওই হাসপাতালের সিইও রূপক বড়ুয়ার অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা এই ধরনের আহতদের ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও রকম অগ্রিম নিই না। রোগীর পরিবারকে স্রেফ জানানো হয়েছিল, পরবর্তীকালে কত খরচ পড়তে পারে।’’

Advertisement

রবীন্দ্র সরোবর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘হাসপাতালকে বোঝানো গিয়েছে। কিন্তু রাস্তার এই অবস্থা নিয়ে কাকে বলব? এ দিকে আরও ভাল করে নজর দেওয়া উচিত ছিল কেএমডিএ-র।’’ গড়িয়া এবং ঢাকুরিয়ার ঘটনার পরে হুঁশ ফেরা তো দূর, রাস্তা মেরামতির দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলিকে এ দিনও দেখা গেল, দায় নিয়ে ঠেলাঠেলিতে ব্যস্ত। কেএমডিএ-র এক কর্তা বললেন, ‘‘ওই সেতু আমাদের অধীনে। দু’বছর আগে আমরা ওখানে সংস্কারের কাজ করেছিলাম। তবে সেতুর উপরের রাস্তা কোথাও খারাপ থাকলে তা পুরসভার তরফে স্থানীয় ভাবে সংস্কার করে দেওয়া হয়। খবর পেলে আমরাও করি।’’

এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরোর অন্তর্গত। বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বললেন, ‘‘ওই গর্ত আমার চোখে পড়েনি। জানলে ঠিক করে দিতাম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement