বিধাননগর কমিশনারেট।—ফাইল চিত্র।
বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বুধবারের ধর্মঘটের মোকাবিলায় পাঁচ নম্বর সেক্টর, শিল্পতালুক, নিউ টাউনে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিশেষ কড়াকড়ি করছে পুলিশ। বিধাননগর কমিশনারেটের কর্তারা জানিয়েছেন, ওই সব জায়গা তো বটেই, কোথাওই জোর করে জনজীবন ব্যাহত করার চেষ্টা হলে তা সব ভাবে আটকানো হবে।
উল্লেখ্য, শিল্পতালুক পাঁচ নম্বর সেক্টর কিংবা নিউ টাউনের তথ্যপ্রযুক্তি নগরী সব সময়েই প্রচারে থাকে। বাম আমলে এক বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্বয়ং পাঁচ নম্বর সেক্টরে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা অবরোধকারীদের ভর্ৎসনা করেছিলেন। তার পর থেকে আর কখনওই ধর্মঘটের প্রভাব ওই দুই জায়গায় পড়েনি। এ রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও সব সময়ে ধর্মঘট সংস্কৃতির বিরোধিতা করেন। বর্তমানে নিউ টাউনের তথ্য প্রযুক্তি নগরী কিংবা পাঁচ নম্বর সেক্টরের শিল্পতালুকের খ্যাতি বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে বুধবার ওই সব জায়গায় কড়া হাতে ধর্মঘট মোকাবিলা করা হবে বলেই পুলিশ জানিয়েছে। পাঁচ নম্বর সেক্টর এবং নিউ টাউনের বিশ্ববাংলা সরণি বিমানবন্দর যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। তা ছাড়া ভিআইপি রোড তো রয়েছেই।
বিধাননগরের যুগ্ম কমিশনার (সদর) কুণাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। জোর করে ধর্মঘট করার চেষ্টা হলে তা আটকানো হবে। প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরাও রাস্তায় নামবেন।’’ বিগত ধর্মঘটে যে সব জায়গায় গোলমাল হয়েছে সেই সব জায়গায় আলাদা করে পুলিশ নজরদারি চালাবে।
পুলিশ জানিয়েছে, যশোর রোড, ভিআইপি রোড, বিশ্ববাংলা সরণির পাশাপাশি পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে সল্টলেকের অফিসপাড়াতেও। থানা ভিত্তিক ভাবে পুলিশ মোতায়েন করা হবে সব জায়গাতেই। সর্বত্র ঘুরবে পুলিশের টহলদারি গাড়িও। বুধবার ভোর থেকেই পথে নামবে পুলিশ বাহিনী। যাতে সরকারি-বেসরকারি বাস কিংবা স্কুলবাস চলাচলে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা কিংবা রাস্তা আটকানোর চেষ্টার কোনও ঘটনা ঘটলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছবে পুলিশ।
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, বহু অফিসই গাড়ি করে কর্মীদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। তা ছাড়া বাড়িতে বসেও অনেকে অফিসের কাজ করেন। বিগত দিনে ধর্মঘটের তেমন প্রভাব সেখানে পড়েনি বলেই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা জানান।
অবশ্য করুণাময়ী, বিদ্যুৎ ভবন, বিকাশ ভবন, সেচ ভবনের মতো অফিসপাড়ায় চাকরি করতে আসা নিত্যযাত্রীদের অনেকে জানিয়েছেন, তাঁরা মঙ্গলবার রাতে অফিসের কাছাকাছি কোথাও থাকার কথা ভেবেছেন। তবে ট্রেন-বাস চললে সল্টলেকে যাতায়াতে তেমন সমস্যা হবে না বলেও তাঁরা জানান। যদিও সল্টলেকে অনেক ব্লকেই সরকারি অফিস রয়েছে। এফডি ব্লকে রয়েছে বিধাননগর পুরসভা। ওই সব জায়গার উপরেও নজরদারি চলবে বলে কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে।
উল্টোডাঙা, বেলেঘাটা, কাঁকুড়গাছির মতো জায়গা থেকে বহু যাত্রীই অটোয় চেপে সল্টলেকে পৌঁছন। তৃণমূল পরিচালিত অটো ইউনিয়নগুলি জানিয়েছে, অন্য দিনের মতোই তারা পরিষেবা চালু রাখবে।