ফাইল চিত্র।
সল্টলেক-সহ বিধাননগর পুর এলাকায় আবাসিক বাড়ির একটি করে তলা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে বিধাননগর পুরসভা। শুক্রবার পুরসভার মেয়র পারিষদদের বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়। আগামী বুধবার ওই প্রস্তাব পুরসভার বোর্ডের বৈঠকে অনুমোদন করানো হতে পারে।
উল্লেখ্য, বাম আমলেও সল্টলেকে বাড়ির একটি করে তলা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হয়। তখন তৃণমূল নাগরিক কনভেনশন করে তার বিরোধিতা করে। আচমকা তলা বাড়ানো হলে শহরের নিকাশি ব্যবস্থার উপরে তার প্রভাব পড়বে বলে সে সময়ে যুক্তি দেখিয়েছিল তৃণমূল। পুরসভা সূত্রের খবর, শুক্রবারের বৈঠকে পুরসভার কমিশনার সুজয় সরকার এই বিষয়টি উত্থাপন করলে জল ও নিকাশি ব্যবস্থার উপরে তার প্রভাব নিয়েও আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, তলা বৃদ্ধির পাশাপাশি আবাসিক বাড়িতে লিফট বসানোর পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। সবই নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী অবশ্য এখনই বিষয়টি খোলসা করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক ধরনের আলোচনাই হয়েছে। বোর্ডের বৈঠকের আগে কিছু বলব না। আবাসিকেরা অনেক দিন ধরেই এ নিয়ে আবেদন করছেন।’’
যদিও এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সল্টলেকে প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা জাঁকিয়ে বসার আশঙ্কা করছে কোনও কোনও মহল। তাদের মতে, পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম ভিন্ রাজ্য বা বিদেশে বসবাস করার কারণে সল্টলেক কার্যত বৃদ্ধাবাসে পরিণত হয়েছে। ফলে তলা বৃ্দ্ধি এবং লিফট বসানোর সুযোগ থাকলে ভবিষ্যতে ওই বরিষ্ঠ নাগরিকদের বাড়ি কিনে বহুতল তৈরি করার আশঙ্কা থাকছে। এক সময়ে সল্টলেকে বাড়ি বিক্রির অনুমতি ছিল না, বেআইনি পথে বাড়ি হস্তান্তর হয়ে যেত। বর্তমানে নগরোন্নয়ন দফতরকে চড়া জরিমানা দিয়ে সল্টলেকে বাড়ি কেনার সুযোগ রয়েছে। সেই চড়া জরিমানা কোনও ব্যক্তির একার পক্ষে দেওয়া সাধ্যাতিরিক্ত হলেও প্রোমোটারদের পক্ষে তা সম্ভব।
সিপিএম নেতা তথা বিধাননগর পুরসভার এক সময়ের চেয়ারম্যান পারিষদ নন্দগোপাল ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের বোর্ড যখন এ নিয়ে উদ্যোগী হয়েছিল, তখন তৃণমূল এবং নাগরিকদের সংগঠন তা আটকে দেয়। নন্দের কথায়, ‘‘বর্ধিত পরিবারের স্বার্থে তলা বৃদ্ধি হতেই পারে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম অন্যত্র থাকার কারণে সল্টলেকে অসংখ্য বাড়িতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা রয়েছেন। তাই তলা বৃদ্ধির পরিকল্পনা প্রোমোটারদেরই সুবিধা করে দেবে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।’’