প্রতীকী ছবি।
রাজনৈতিক অশান্তির জেরে ভোটের আগেই শিরোনামে ভবানীপুর। এমন আবহেই হতে চলেছে ‘হাই-প্রোফাইল’ ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। সে দিন এলাকায় শান্তি বজায় রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তিত লালবাজারের কর্তারা। সেই কারণে সুরক্ষায় কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাইছেন না তাঁরা। সোমবার সেখানে শেষ হয়েছে প্রচার।
লালবাজার সূত্রের খবর, ওই দিন কলকাতা পুলিশের মোট ন’টি থানা এলাকায় ভোটগ্রহণ হবে। এর জন্য প্রতিটি থানার দায়িত্ব বুধবার থেকেই তুলে দেওয়া হচ্ছে এক জন করে ডিসি-র হাতে। তাঁদের সঙ্গে বিরাট বাহিনী ছাড়াও থাকছেন এসি পদমর্যাদার এক জন করে অফিসার। কাল, বুধবার সকাল থেকেই ডিসি-রা থানায় পৌঁছে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
লালবাজার জানিয়েছে, ডিসি-দের পাশাপাশি ভোটের আগের দিন চার জন যুগ্ম কমিশনারকে ওই ন’টি থানার দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হবে। তাঁদের সঙ্গে থাকবে র্যাফের বিরাট বাহিনী। ভবানীপুরে নিরাপত্তার দায়িত্বে এক জন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারও থাকবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ভোটের প্রচারকে কেন্দ্র করে বার বারই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভবানীপুরের পরিস্থিতি। সে কথা মাথায় রেখেই বৃহস্পতিবার শান্তিতে ভোট করানোর বিষয়ে কিছুটা চিন্তিত লালবাজার। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, ভবানীপুরে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন খোদ প্রশাসনের প্রধান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই সেখানে নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করানোটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ পুলিশের সামনে। ডিসি-দের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্তাকেও নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছে।
ভোটপর্ব যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়, তার জন্য ইতিমধ্যেই বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। গত সপ্তাহের শেষ দিকে কমিশনার বৈঠক করেন ভোটের সঙ্গে যুক্ত থানা এবং বাহিনীর অফিসারদের সঙ্গে। সেখানেই তিনি ভোটের দিন ভবানীপুরে শান্তি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
লালবাজার জানিয়েছে, ভবানীপুর কেন্দ্রের ন’টি থানা এলাকায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৯৮। মোট বুথের সংখ্যা ২৮৭। প্রতিটি বুথে ‘হাফ সেকশন’, অর্থাৎ তিন জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকবেন নিরাপত্তার দায়িত্বে। সে দিন ‘কুইক রেসপন্স টিম’ (কিউআরটি)-এর দায়িত্বও থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে, যারা এলাকায় টহল দেবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে। প্রয়োজনে তারা বুথেও প্রবেশ করতে পারবে। অন্য দিকে, বুথের বাইরে এবং এলাকার দায়িত্বে থাকছে কলকাতা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, কাল, বুধবার থেকেই ভোটের কাজে নিযুক্ত পুলিশবাহিনী নিজেদের নিজেদের এলাকায় পৌঁছে যাবে। ওই দিন সকাল থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ৩৮টি জায়গায় থাকবে পুলিশ-পিকেট। শুধু ওই কেন্দ্রের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই ন’টি জায়গায় ‘হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড’ (এইচআরএফএস) মোতায়েন করা হচ্ছে। এ ছাড়া, থাকছে ২৩টি আরটি মোবাইল ভ্যান।
তবে, এত রকম ব্যবস্থা নিয়েও অশান্তি পুরোপুরি রুখে দেওয়া যাবে কি না, পুলিশের চিন্তা এখন সেটাই।