ধোনি-ময়: কেকেআর-সিএসকে ম্যাচের আগে ইডেনমুখী জনতার ভিড়। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আইপিএলের উত্তেজনার সুযোগে শহরে কি ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে বেটিং চক্র? ক্রমশ কি ছড়াচ্ছে চক্রের জাল? লালবাজার ‘নজরদারি’র কথা বললেও বেটিং চক্রে লাগাম পড়ছে কি না— সেই প্রশ্ন থাকছে। বরং আইপিএল জ্বরের সুযোগে পুলিশি নজর এড়িয়ে শহরে এমন চক্র ক্রমশ সক্রিয় হচ্ছে বলেই খবর।
গত বছর ম্যাচ চলাকালীন ইডেনেই বেটিং কারবারিদের সন্ধান পেয়েছিল পুলিশ। গ্যালারি থেকে তিন জন এবং ধর্মতলার একটি অতিথিশালা থেকে দু’জনকে ধরে পুলিশ। উদ্ধার হয় একাধিক মোবাইল, ল্যাপটপ-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র। ধৃতদের জেরায় জানা যায়, ইডেনের গ্যালারি থেকে অতিথিশালায় থাকা দু’জনকে ফোনে ফলাফল জানাচ্ছিল চক্রীরা। বল ধরে ধরে ফল জানিয়ে চলছিল বেটিংয়ের দর হাঁকা, মোটা টাকার লেনদেন। ম্যাচের মূল ফলাফল ছাড়াও ছোট ছোট অংশ ধরেও বেটিং চলছিল বলে খবর।
সূত্রের খবর, এ বারও শহরে ক্রিকেট-জ্বরের সুযোগে বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় বেটিং চক্রীরা। বিশেষত কেকেআর-এর ম্যাচ ঘিরেই বেটিং বেশি হচ্ছে। লেক গার্ডেন্স, ভবানীপুর, গল্ফ গ্রিন, কসবা, ময়দান-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলছে এই কারবার। বড়বাজার, পোস্তা এলাকাতেও ছড়িয়ে বেটিংয়ের জাল। গত কয়েক বছরে শহরের বিভিন্ন রেস্তরাঁ, অতিথিশালায় বসে কাজ করত চক্রীরা। কিন্তু এখন পুলিশি নজর এড়াতে আস্তানা বদলেছে তারা। এখন ফোন করেই দর লাগানোর ‘খেলা’ চলছে বলে খবর। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, জুয়াড়িদের তরফে অনলাইনে বিভিন্ন ‘আইডি’ তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই থাকছে কবে, কখন, কাদের খেলা থেকে শুরু করে দরদামের খুঁটিনাটি। খেলার কোন অংশে কার পক্ষে বাজি ধরলে কত টাকা মিলবে, সে সবও থাকছে বিস্তারিত। ম্যাচের ফলাফলের পাশাপাশি টসে কে জিতবে, শেষ পাঁচ বা ছয় ওভারে কত রান উঠবে, শেষ ওভারে কত রান উঠবে, নির্দিষ্ট খেলোয়াড় কত রান বা উইকেট নেবেন— তা নিয়েও দর হাঁকা চলছে।
যদিও লালবাজারের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বেটিং আটকাতে ‘নজর’ রয়েছে। ইতিমধ্যে এ বছর বেটিং চালানোর অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দিন তিন আগে হেয়ার স্ট্রিট এলাকা থেকে প্রথমে এক যুবক ও পরে তাঁকে জেরা করে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হয় নগদ টাকা। পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন রেস্তরাঁ, অতিথিশালা। পুলিশি নজরদারি রয়েছে। বিশেষত, কেকেআর-এর ম্যাচের দিন থাকছে বাড়তি নজর। লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার বিশেষ দল আইপিএল-এ বেটিং রুখতে সক্রিয় রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘চোখ-কান তো খোলা রাখতেই হচ্ছে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাহিনী নজরদারি চালাচ্ছে। বেআইনি কারবারকে রেয়াত করা হবে না।’’