দীপঙ্কর দাস।
শেষ পর্যন্ত ১২০ ঘণ্টার টানাপড়েনের পরে আদালতের নির্দেশে কাকদ্বীপের সিপিএম কর্মী দেবু দাস ও তাঁর স্ত্রী ঊষার মরদেহ হাতে পেলেন তাঁদের ছেলে দীপঙ্কর। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর নির্দেশে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ডায়মন্ড হারবারের মর্গ থেকে ছেলের হাতে তুলে দেওয়া হয় দগ্ধ ওই দম্পতির দেহ। সিপিএমের দুই নেতা শ্যামল চক্রবর্তী ও সুজন চক্রবর্তী মৃতদেহ নিয়ে চলে আসেন কলকাতায়। রাতে কেওড়াতলা শ্মশানে বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, রবীন দেবদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য।
দীপঙ্করের হাতে তাঁর বাবা-মায়ের দেহ তুলে দেওয়া ও মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্তের জন্য এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি চক্রবর্তীর এজলাসে আবেদন জানান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি জানান, পুড়ে ঝলসে গিয়ে মৃত্যুর পরে একশো ঘণ্টারও বেশি কেটে গিয়েছে। কিন্তু ময়না তদন্তের পরেও পুলিশ দেহ দু’টি ওই দম্পতির ছেলের হাতে তুলে দিচ্ছে না। সরকারি আইনজীবী শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য আদালতে দাবি করেন, পুলিশ দেহ দু’টি তুলে দিতে চাইলেও কেউ তা নিতে যাচ্ছেন না। পুলিশ কী কী করেছে, তা সবিস্তার উল্লেখ করে জোড়াসাঁকো থানায় জেনারেল ডায়েরি করেও রাখা হয়েছে। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি চক্রবর্তী নির্দেশ দেন, হারউড পয়েন্ট থানার এক সাব ইনস্পেক্টর ডায়মন্ড হারবার মর্গ থেকে দেহ দু’টি দীপঙ্করের হাতে তুলে দেবেন। সেই সময়ে কাকদ্বীপ থানার ওসি-কেও মর্গে হাজির থাকতে হবে।
দীপঙ্কর অবশ্য পুলিশের ভূমিকার বিরুদ্ধেই সরব। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশ কী তদন্ত করছে? অপরাধীরা এখনও বাইরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। বাবা-মায়ের দেহ পেতে লাগল চার দিন। তা-ও আদালতের মাধ্যমে!’’ সিপিএম নেতা সুজনবাবু বলেন, ‘‘আগেই তৃণমূল নেতারা শর্ট সার্কিট, বাজ পড়ে মৃত্যুর মতো নানা কথা বলছেন। তাই ঘটনার তদন্ত ঠিকমতো হবে না বলেই মনে করছি। সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছিলাম আদালতে।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগের রাতে বুধাখালির বাসিন্দা দেবু ও ঊষার দগ্ধ দেহ পাওয়া গিয়েছিল। দীপঙ্করের অভিযোগ, তাঁর বাবা-মাকে খুন করা হয়েছে।