সেজে উঠছে পরেশনাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকা

বদ্রিদাস টেম্পল স্ট্রিটের পরেশনাথ মন্দিরকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হল রাজ্য পর্যটন দফতর। মন্দিরে ঢোকার রাস্তাটির সংস্কার-সহ বেশ কিছু কাজের জন্য রাজ্য পর্যটন দফতর কেএমডিএ-কে দায়িত্ব দিয়েছে। এ কাজে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে পর্যটন দফতর সূত্রে খবর।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় ও জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০০:২৩
Share:

রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটের উপরে নতুন করে সেজে উঠছে এই ফোয়ারা।

বদ্রিদাস টেম্পল স্ট্রিটের পরেশনাথ মন্দিরকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হল রাজ্য পর্যটন দফতর। মন্দিরে ঢোকার রাস্তাটির সংস্কার-সহ বেশ কিছু কাজের জন্য রাজ্য পর্যটন দফতর কেএমডিএ-কে দায়িত্ব দিয়েছে। এ কাজে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে পর্যটন দফতর সূত্রে খবর।

Advertisement

১৮৬৭ সালে বদ্রিদাস বাহাদুর মুকিম এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ২৩তম জৈন তীর্থঙ্কর পরেশনাথের স্মরণে তৈরি হয়েছিল এই জৈন মন্দির। আগামী বছর এই মন্দিরের ১৫০ বছর পূর্তি। বদ্রিদাস ছিলেন শিল্পের পৃষ্ঠপোষক। এই চত্বরে রয়েছে চারটি মন্দির। একটি দশম জৈন অবতার শ্রীশীতলনাথের মন্দির। এর দক্ষিণে রয়েছে চন্দ্রপ্রভুজীদেবের মন্দির। ১৮৯৫ সালে গণেশলাল কপূরচাঁদ জওহর এর প্রতিষ্ঠাতা। দাদাজী মহারাজের এবং শেষ জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীরের দু’টি মন্দিরও রয়েছে এখানে। শীতলনাথের কপাল হীরে খচিত। দর্শনার্থীদের মূল আকর্ষণ এটি। এখানে একটি ঘিয়ের বাতি রয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি আজ পর্যন্ত নেভেনি। রঙিন কাচ এবং ছোট ছোট আয়না দিয়ে মন্দিরগুলির অন্দরসজ্জা। ফুল, জলাশয় এবং ফোয়ারা দিয়ে সাজানো বাগান এবং মন্দিরের ভিতরের কারুকার্য দেখতে প্রতি দিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন।

মন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নিয়মিত ভিতরের সংস্কার করা হলেও দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি মন্দির সংলগ্ন এলাকা। সাহিত্য পরিষদ স্ট্রিট থেকে গৌরিবাড়ি প্রবেশ মুখে এক সময়ে দু’টি স্তম্ভ ছিল। ছোট ছোট টাইলস এবং কাচে সাজানো সেই স্তম্ভে দীর্ঘ অবহেলার ছাপ পড়েছিল। গাছ, ভ্যাট ও অস্থায়ী স্টলের আড়ালে চলে গিয়েছিল সেগুলি। সেই স্তম্ভ দু’টি সংস্কার করার কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। গাছ ছাটা ও হকারদের নিয়ন্ত্রণের কাজ করবে প্রশাসন। রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটের উপরেই ছিল পুরনো ফোয়ারাটিও। সংস্কার করা হয়েছে সেটির। আলো এবং ঝরনায় রঙিন ফোয়ারাটি পরেশনাথ মন্দিরে আসা পর্যটকদের পথ চিহ্নিত করবে। এর সামনের ছোট ছোট হোটেলগুলিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রঙিন টালি এবং রেলিং দিয়ে জায়গাটিকে ঘেরার কাজও চলছে। এ ছাড়াও মন্দিরের পাঁচিলের বাইরে জৈন ধর্ম সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ম্যুরালের মাধ্যমে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হবে। মন্দির সংলগ্ন রাস্তাটিরও সংস্কার করা হবে।

Advertisement

রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘কলকাতায় জৈনদের অন্যতম তীর্থস্থান এটি। পাশাপাশি শহরের দর্শনীয় স্থানের তালিকাতেও রয়েছে। সারা বছর ধরেই অসংখ্য তীর্থযাত্রী ছাড়াও বহু দেশি-বিদেশি পর্যটক এখানে আসেন। মূল রাস্তা থেকে একটু ভিতরে এই মন্দিরটি। ফলে অনেকেই বুঝতে না পেরে ঘুরপাক খেতে থাকেন। তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এবং আরও বেশি করে পর্যটক টানতে এই সৌন্দর্যায়ন করা হচ্ছে।’’

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement