প্রতীকী ছবি
বারুইপুর পুলিশ জেলা এলাকা কার্যত হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল। অভিযোগ এমনই। কখনও কেউ গুলিতে খুন হয়েছেন। কাউকে আবার কোপানো হয়েছে। অস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা এলাকায় অবাধে ঢুকে পড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে সেখানে।
বুধবার রাতেই সোনারপুর থানা এলাকার চম্পাহাটির বটতলায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি সোনার দোকানে লুটের চেষ্টা হয়। দোকানের নিরাপত্তাকর্মীর মুখে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে তাঁকে গুলি করার হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। তাঁর মুখ বেঁধে দোকানের দরজার একাধিক তালা গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ফেলে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পুলিশের গাড়ি দেখে পালায় তারা। দোকানের মালিক সৌগত ভট্টাচার্যের দাবি, গয়না ও টাকা লুট হয়নি।
শ্যামল মণ্ডল নামে ওই নিরাপত্তাকর্মীর দাবি, তাঁকে দুষ্কৃতীরা মারধর করে। তিনি বলেন, ‘‘রাত ১টা নাগাদ দুই দুষ্কৃতী এসে মারধর করে। মুখে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে বলে, নড়াচড়া করলে গুলি করে দেব। এর পরে আমার মুখ বেঁধে ফেলে রাখা হয়।’’
গত রবিবার রাতে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারের সোনাপট্টিতে ডাকাতদের হাতে খুন হন শহিদ মোল্লা নামে এক রক্ষী। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর জেলা পুলিশের কর্তারা। হাড়োয়া থানা এলাকার একটি দুষ্কৃতী দল এতে জড়িত বলে অনুমান পুলিশের। কয়েক বছর আগে সোনারপুর থানার প্রায় লাগোয়া একটি সোনার দোকানের মালিক গুলিতে খুন হন। তাঁর দোকান লুট হয়। ওই ঘটনায় বাংলাদেশি ডাকাত দল জড়িত ছিল বলে পুলিশের দাবি ছিল। ওই ঘটনায় মাত্র এক জনই ধরা পড়ে।
মাস কয়েক আগে স্কুল যাওয়ার পথে চম্পাহাটির হোসেনপুরে অঙ্কিতা দেব (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রীকে প্রকাশ্যেই কোপায় দুষ্কৃতীরা। হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঘটনায় এক নাবালক-সহ দু’জন গ্রেফতার হলেও তারা ছাত্রীকে আক্রমণের কথা স্বীকার করেনি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
ওই ঘটনারই কয়েক সপ্তাহ পরে চম্পাহাটির রায়পুরে পুকুরে মাছ ধরার সময়ে এক ব্যবসায়ীকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার মূল অভিযুক্ত অধরা।
বুধবার রাতের ঘটনায় বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ভাঙড়-কাণ্ডে ডাকাতদের একটি বড় দল গ্রেফতার হয়েছে। সব ঘটনারই তদন্ত চলছে।’’