সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজভবনে অনুষ্ঠান। উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —নিজস্ব চিত্র।
সাধারণতন্ত্র দিবসেও রাজ্য-রাজভবন ‘দ্বন্দ্ব’! কেন কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডকে দাঁড় করিয়ে রেখে বিএসএফকে দিয়ে অনুষ্ঠান করানো হচ্ছে, কেনই বা অনুষ্ঠানমঞ্চের বাইরে কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি সরকারি সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই পরে রাজভবনে অনুষ্ঠান করেছে কলকাতা পুলিশের ব্যান্ড।
জানা যাচ্ছে, বিকেলে রাজভবনে ঢোকার সময়ে কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডের সদস্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কৌতূহলী মুখ্যমন্ত্রী খোঁজখবর করেন। কেন কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডকে রাজভবনের অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়নি জানতে চান তিনি। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী জানতে পারেন ওই সময়ে বিএসএফের ব্যান্ড অনুষ্ঠান পরিবেশন করছে।
কিন্তু কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডকে জায়গা দেওয়া হয়নি। এর পর নাকি দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েক জন সরকারি আধিকারিকের উপর উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, বাংলার রাজভবনের সমস্ত দেখাশোনা করে রাজ্য সরকার। সেখানে পুলিশের সঙ্গে এ রকম ব্যবহার সমীচীন নয়।
সস্ত্রীক রাজ্যপালের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কলকাতা পুলিশের ব্যান্ড ‘পারফর্ম’ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে রাজ্য এবং রাজভবনের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
রবিবার গোটা দেশ পালন করছে ৭৬তম সাধারণতন্ত্র দিবস। কলকাতার রাজভবনেও সেই উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠান রয়েছে। প্রতি বছরের মতো এ বারও ‘পারফর্ম’ করার জন্য রাজভবনে যায় কলকাতা পুলিশের একটি ব্যান্ড। বিকেলে চা-চক্রের আমন্ত্রণ ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু তিনি রাজভবনে অনুষ্ঠানমঞ্চে ঢোকার মুখে থমকে দাঁড়ান একটি জায়গায়। ব্যান্ডের সদস্যদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। বস্তুত, তাঁর হস্তক্ষেপেই ‘পারফর্ম’ করে কলকাতা পুলিশের ব্যান্ড। ওই অনুষ্ঠানের সময় সস্ত্রীক রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা উপস্থিত ছিলেন।
রাতে রাজভবনের তরফে ওএসডি সন্দীপকুমার সিংহ বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য,কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডের জন্য আলাদা করে একটি জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছিল। যখন এমনটা হয়, তিনি হস্তক্ষেপ করেন। কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডের সদস্যদের ডেকে ‘পারফর্ম’ করার উপযুক্ত জায়গা করে দেন। বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকেও ব্যাখ্যা করেছেন এবং কিছু ক্ষণ কলকাতা পুলিশের ব্যান্ডের অনুষ্ঠান দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ওই বিষয়টি তিনি রাজ্যপালকেও জানিয়েছেন। তাই শুনে রাজ্যপাল বোস নির্দেশ দেন, আগে থেকে যে সব অনুষ্ঠান হওয়ার সূচি রয়েছে, সেগুলো আধিকারিকদের অনুমতিক্রমেই হওয়া উচিত।